শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় প্রদত্ত অধ্যাপক ড. নাসিম আখতার হোসাইনের বক্তব্য বিনা অনুমতিতে গোপনে রেকর্ড করে জনসমক্ষে প্রচারের মাধ্যমে তাঁকে হয়রানি করার অপচেষ্টার প্রতিবাদ

সম্মানিত সহকর্মিগণ,
আমরা অত্যন্ত ক্ষোভের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, আমাদের পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীর প্রতি লিঙ্গীয় বৈষম্যমূলক নানাবিধ প্রত্যক্ষ ও প্রচ্ছন্ন হয়রানি ও নিপীড়নের যে সংস্কৃতি এবং চর্চা বহাল রয়েছে, তা আমাদের কিছু সম্মানিত সহকর্মীর আচরণের মধ্যেও বিপজ্জনকভাবে দৃশ্যমান হয়ে পড়ছে। তাঁরা নারীর এগিয়ে যাবার পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন, কেউ এগিয়ে গেলে কিংবা নির্বাচনে অংশ নিলে, অথবা শিক্ষা-গবেষণায় অবদান রাখতে চাইলে তাঁকে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করা, নানাভাবে তাঁর/তাঁদের অর্জনকে খাটো করা, অথবা হেয় প্রতিপন্ন করার অপপ্রচেষ্টা জারি রাখেন। যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশে নারী আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ, বিস্ময়করভাবে সেই বিশ্ববিদ্যালয়েরই সম্মানিত কতিপয় শিক্ষক অধ্যাপক ড. নাসিম আখতার হোসাইনের সঙ্গে এমন আচরণ করেছেন। গত ০১.১০.২০১৩ তারিখে উপাচার্য ভবনের সামনে অবস্থানরত একদল শিক্ষক অন্যায়, বেআইনী ও অনৈতিকভাবে গোপনে ধারণকৃত ড. নাসিম আখতার হোসাইনের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় প্রদত্ত বক্তব্য মাইকযোগে জনসমক্ষে প্রচার করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি একটি পেশাজীবীদের সংগঠন। বিভিন্ন সময়েই জাহাঙ্গীরনগর শিক্ষক সমিতি অন্যায় ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে। অধ্যাপক নাসিম আখতার হোসাইন এই শিক্ষক সমিতির একজন সম্মানিত সদস্য। শিক্ষক সমিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই সময়ের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলো নিয়ে তাঁর দেয়া বক্তব্য একটি পেশাজীবী সংগঠনের সভায় প্রদত্ত বক্তব্য, যা শিক্ষক সমিতির অনুমোদন ছাড়া এবং সংশ্লিষ্ট বক্তার অনুমতি ছাড়া রেকর্ড করা সম্পূর্ণ বেআইনী, অন্যায়, অবৈধ ও মানবাধিকার পরিপন্থী। এভাবে বিশেষ উদ্দেশ্যে একজন নারী সহকর্মীর বক্তব্য রেকর্ড ও প্রচার করা নারী হিসাবে তার প্রতি নিপীড়নমূলক ও লিঙ্গীয় বৈষম্যমূলক আচরণ বলে আমরা মনে করি। আপনারা জানেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা-গবেষণায় অধ্যাপক ড. নাসিম যেমন একজন নিষ্ঠাবান শিক্ষক, তেমনি সুষ্ঠু শিক্ষার পরিবেশ, ক্যাম্পাসে প্রাণ-বৈচিত্র রক্ষা এবং দেশে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার ও নিপীড়নবিরোধী আন্দোলনেরও একজন সক্রিয় কর্মী। আমরা তাঁকে এভাবে জনসমক্ষে হয়রানি করার ও হেয় প্রতিপন্ন করার অপতৎপরতার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একইসঙ্গে আমরা শিক্ষক সমিতির কাছে দায়ী ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষকবৃন্দ:

অধ্যাপক ড. সৌদা আখতার, অধ্যাপক ড. কাঞ্চন চৌধুরী, অধ্যাপক ড. রাশেদা আখতার, অধ্যাপক ড. পৃথ্বিলা নাজনীন নীলিমা, অধ্যাপক ড. আইনুন নাহার, অধ্যাপক ড. সীমা হক, অধ্যাপক আরিফা সুলতানা, অধ্যাপক ড. খুরশীদা খায়ের, সাজেদা বেগম, ড. সোমা মুমতাজ, শরমিন্দ নীলোর্মি, খায়েরুজ্জাহান মিতু, মির্জা তাসলিমা, ইসমত আরা, সায়েমা খাতুন, নাসরীন খন্দকার, খন্দকার হালিমা আখতার রিবন, মালিহা নার্গিস আহ্মেদ, ফারহানা আখতার, তারানা বেগম, ড. ফারহা মতিন জুলিয়ানা, ড. প্রিসিলা খান মলি, মোছা. তমালিকা সুলতানা, নুসরাত জাহান, তানিয়া শারমীন, রুমানা রইছ, ড. শারমীন সুলতানা, ড. উম্মে সালমা যোহরা, শারমীন জামান, আমিনা ইসলাম, এলমা জান্নাতুল ফেরদৌসি, শামীমা নাসরীন জলি, পারভীন জলী, সাবিকুন নাহার, ফারহানা সেহরীন, বারতা চক্রবর্তী, রেজওয়ানা করিম ¯িœগ্ধা, সামিয়া ফারহানা সুমা।



Categories: আন্দোলন বার্তা

Leave a Reply

Please log in using one of these methods to post your comment:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s

%d bloggers like this: