জাতীয় কমিটি দেশকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে ?

নাসরিন সিরাজ এ্যানী

১৬ জুন ২০১১-এ বাংলাদেশ সরকার ও পেট্রোবাংলা কোনোকো ফিলিপসকে বাংলাদেশের সমুদ্র বক্ষে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদনের জন্য ইজারা দিল। উল্লেখ্য ২০০৮ থেকে এই ইজারা দেয়ার পাঁয়তারা শুরু হলে তার বিরোধীতা করে তেল-গ্যাস-কয়লা খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির নেতা-কর্মীরা পেট্রেবাংলা ঘেরাও করতে যায়। সেই সময়ে পুলিশ তাদের উপর, বিশেষ করে জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক আনু মুহাম্মদের উপর হামলা চালায়। এর প্রতিবাদে পরে জাতীয় কমিটি রাজধানীতে অর্ধ-দিবস হরতালও পালন করে। এবছরের জুনের ১৩ তারিখেও দেশের বাম রাজনৈতিক সংগঠন ও সমমনা নাগরিকদের নেতৃত্বাধীন এই মোর্চাটি সমুদ্র বক্ষের গ্যাস ব্লক ইজারা দেয়ার সরকারী সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করতে জ্বালানী মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে; বিশেষভাবে আহত হয় নৃবিজ্ঞানী রেহনুমা আহমেদ। কিন্তু সরকার বা পেট্রোবাংলা জাতীয় কমিটির প্রতিবাদের থোড়াই কেয়ার করে।

জাতীয় কমিটির জন্ম ১৯৯৮ সালে। এর নেতা কর্মীরা অব্যাহতভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করাচ্ছে যে বাংলাদেশ সরকার ও বহুজাতিক তেল কোম্পানীগুলোর সাথে সম্পাদিত উৎপাদন বন্টন চুক্তির কারনে দেশের ডলার রিজার্ভ ও খনিজ সম্পদ বৈদেশিক বাজারে পাচার হয়ে যাচ্ছে ফলে বাংলাদেশের লোকসানের বোঝা বাড়ছে। এরা প্রতিবাদ করেছে মাগুরছড়া ও টেংরাটিলার গ্যাস ক্ষেত্র বিস্ফোরনের পর বহুজাতিক তেল কোম্পানীগুলোর ক্ষতিপূরন না দিয়ে পলায়ন। এরা ঠেকিয়েছে বিবিয়ানা থেকে পাইপ লাইনে ভারতে গ্যাস রপ্তানীর উদ্যোগ, দেশীয় ইস্পাত কারখানাকে বঞ্চিত করে ভারতীয় কোম্পানি টাটাকে সাবসিডাইজড দরে গ্যাস বিক্রির দেন দরবার, দিনাজপুর জেলার চার থানার পাঁচ লাখ (স্থানীয় হিসাব; সরকারী হিসাব ১ লাখ ৩০ হাজার; এশিয়া এনার্জির হিসাব ৫০ হাজার) মানুষ, যার মধ্যে অধিকাংশই ক্ষুদ্র কৃষক ও ক্ষেত মজুর, উৎখাত করে ৭ হাজার হেক্টর এলাকার উন্মুক্ত কয়লা খনি প্রকল্প। ১৬ জুন জাতীয় কমিটি কালো পতাকা মিছিল করে পেট্রোবাংলার সাথে কোনোকো ফিলিপসের চুক্তিটি প্রত্যাখ্যান করে।

একজন গবেষক হিসেবে জাতীয় কমিটির আন্দোলনের গতিবিধি কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করবো বলে ১৬ তারিখে ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে কালো পতাকা মিছিলে আমি যোগ দিয়েছিলাম। মনে আমার প্রশ্ন সরকার কেন এতো উদ্ধত? এতোগুলো মানুষের এতো প্রতিবাদ সরকার কেন উপেক্ষা করছে? দেশের সবার জন্য ভাত, কাপড়, শিক্ষা, কর্মসংস্থান, আশ্রয়, চিকিৎসা সংকট চরম এই বাংলাদেশে কিন্তু সেই সংকট নিরসনের চাইতে বিদ্যুৎ সংকট নিয়ে সরকারের এতো তৎপরতা কেন? গরীব দেশের গরীব মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রের চেয়ে টেলিকমিউনিকেশন ও জ্বালানী ক্ষেত্রে সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ বেশী আর সেটার ওকালতি জাতিসংঘও করছে- এরকম কেন? বাংলাদেশ যেখানে দেশীয় শাসকদের লুটপাটের জন্য ১০০ কোটি টাকা (এরশাদ) থেকে ৬ হাজার কোটি টাকা (তারেক জিয়া) পর্যন্ত গচ্ছা দেয় সেখানে কোনোকো ফিলিপ্সকে যে গ্যাস ক্ষেত্রগুলো ইজারা দেয়া হয়েছে সেগুলোর উন্নয়নের জন্য মাত্র ১১০ মিলিয়ন ডলার সরকারের তহবিলে নেই, কেন?

নৃবিজ্ঞানী জেমস ফারগুসনের গবেষণা কাজ থেকে উপরের প্রশ্নগুলোর আংশিক উত্তর পাওয়া যায়, তবে তিনি কাজ করেছেন আফ্রিকায়, আর তাঁর কাজের মাধ্যমে আফ্রিকার যে চিত্র ফুটে উঠে তার সাথে বাংলাদেশের কিছু কিছু মিল দেখা যায়। আফ্রিকা নিয়ে তিনি যা বলেছেন তার সার সংক্ষেপ হলে, আপাতঃ দৃষ্টিতে এসব জায়গায় রাষ্ট্র ঠিকমত কাজ করছেনা বলে মনে হয়। একে তখন “ভেঙ্গে পড়া রাষ্ট্র”, “অকার্যকর রাষ্ট্র” ইত্যাদি বলে ডকা হয়। কিন্তু ঘটনাগুলোকে ভিন্নভাবে দেখার সুযোত আছে। আপনি যদি রাষ্ট্রকে একটি তেল কোম্পানী হিসেবে কল্পনা করেন তাহলে দেখবেন রাষ্ট্রটি ঠিকই কাজ করছে। অর্থাৎ, বিনিয়োগের নামে এরা বহুজাতিক পুঁজি’র ( যেমন: তেল কোম্পানীর) নিরাপত্তার জন্য কাঁটাতারের বেড়া ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বাহিনী তৈরী করে। ফলে অংক হিসেবে বড় এই সব পুঁজি দেশের জিডিপি’র হিসেবে উন্নয়ন দেখালেও তেল কোম্পানীর বেড়ার বাইরে সেই পুঁজির ছিটেফোঁটাও মানুষ পায়না। এক এনক্লেভ থেকে এইসব পুঁজি লাফিয়ে লাফিয়ে আরেক এনক্লেভে যাচ্ছে আর বিশ্বব্যপী ঘুরে বেড়াচ্ছে এই হল পন্ডিত ফাগুসনের উপলদ্ধি। এনক্লেভ মানে অন্যদেশের মধ্যে অবস্থিত একটি দেশের অঞ্চল। একই আর্টিকেলে তিনি বলেন আম জনতার সেবা, যেটা রাষ্টের আসল কাজ বলে ধরে নেয়া হয়, সেটা ছেড়ে রাখা হয়েছে উন্নয়ন সংস্থাগুলোর জন্য। আর এমন পরিস্থিতি হবার জন্য বিশ্বব্যাংক এর চালু করা স্ট্রকচারাল এডজাস্টমেন্ট নীতি দায়ী। এই নীতির ফলে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলো তার নিজস্ব সেবাখাত, যেমন শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবহন, ব্যক্তিখাতে ছেড়ে দিতে শুরু করে।

বাংলাদেশে বহুজাতিক পুঁজি অনুপ্রবেশের কারনে আফ্রিকার মত হুবুহু এক রকম পরিস্থিতি তৈরী হয়নি। যেমন ফারগুসনের দৃষ্টিতে আফ্রিকায় উন্নয়ন সংস্থাগুলো জনগণকে এমনভাবে রাজনীতি বিমুখ করে তৈরী করেছে যে সেখানে বহুজাতিক তেল কোম্পানী বিরোধী কোন সংগঠিত প্রতিরোধ গড়ে ওঠেনি। বাংলাদেশ তার ব্যতিক্রম। যেমন: তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আন্দোলন। তবে বাংলাদেশের সাথে অন্যান্য দেশের আন্দোলন সংগঠনের পার্থক্যও আছে। যেমন নৃবিজ্ঞানী টন সালমানের গবেষণা কাজে দেখা গেছে যে ল্যাটিন আমেরিকা, বিশেষতঃ বলিভিয়ার ২০০০ এ সরকার বিরোধী গণ আন্দোলন গড়ে উঠেছিল কারণ সেখানে তেল কোম্পানীর শোষনের ফলে সাধারণ মানুষের দৈনন্দির চাহিদার গ্যাস ও বিদ্যুৎ পর্যন্ত দুর্লভ হয়ে পড়েছিল আর নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য ছিল আকাশচুম্বী। কিন্তু বাংলাদেশের জাতীয় কমিটির আন্দোলন এখনও বহুজাতিক তেল কোম্পানীর সাথে সম্পাদিত চুক্তি বাতিল করে দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের উপর শতভাগ জাতীয় মালিকানা প্রতিষ্ঠা ও জাতীয় সক্ষমতা বিকাশের দাবীতে সীমাবদ্ধ আছে। এখনও এ আন্দোলন রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের ডাক দেয় না। এ প্রসঙ্গে অবশ্য খোদ জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব এক সাক্ষাৎকারে বলেন যে তিনি জনগণকে সচিবালয় দখল করে মন্ত্রী আমলাদের মুখের উপর এই চুক্তির ফাইলগুলো ছুড়ে ফেলার ডাক দেন যেটা রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলেরই সমার্থক।

কোনোকো ফিলিপসের সাথে পেট্রোবাংলার চুক্তি স্বাক্ষরের আগে পাত্তা দেয়া না হলেও বহুজাতিক তেল কোম্পানী বিরোধী এই আন্দোলন বাংলাদেশে ৩ জুলাই সর্বাত্মক হরতালের ডাকসহ অক্টোবরে ঢাকা ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করে মিডিয়ার তথা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সফল হয়েছে। মিডিয়াতে সরকার ইতিমধ্যে জাতীয় কমিটির বিরুদ্ধে যে সব প্র্রচারনা করছে সেগুলো হল জাতীয় কমিটির কর্মীরা টোকাই, জাতীয় কমিটির নেতারা বিদেশের গুপ্তচর, জাতীয় কমিটির অধ্যাপকেরা নিজের কাজ ফেলে রাষ্ট্রীয় কাজে নাক গলাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর যে উক্তিগুলো মিডিয়া মনোযোগ টেনেছে সেগুলো হল প্রধানমন্ত্রীর চেয়ে কেউ বেশী দেশ প্রেমিক নয়, সরকারের উপর জনগণের অগাধ ও অন্ধ আস্থা রাখতে বলা ও জাতীয় কমিটিকে দায়িত্বজ্ঞানহীন বলে আখ্যা দেয়া এই ধরনের প্রতিক্রিয়া। মিডিয়া প্রচারনায় জাতীয় কমিটি যে কত সফল হয়েছে সেটার প্রমাণ পেলাম আমার সামাজিক নেটওয়ার্কের মধ্যে এই সব বিষয়ে পাল্টা মন্তব্য শুনে। যেমন, ঢাকার একটি সরকারী হাসপাতালের তরুন ডাক্তাররা একটি আড্ডায় আলাপ করেন যে তাদের নিজেদের দেশপ্রেম খুব একটা কম নয় এবং প্রধানমন্ত্রীর দেশ প্রেম নিয়ে বাহাদুরি করা হাস্যকর। তারা এমনও বলেন যে সরকারের উচিত সত্যি সত্যি জাতীয় কমিটির উপর গ্যাস বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানের জন্য ক্ষমতা ছেড়ে দেয়া যেমন নায়ক নামের হিন্দি সিনেমায় ওমরেশপুরী অনিল কাপুরকে দিয়েছিল। তবে তারা এই আলাপের সময় এটাও উল্লেখ করে যে আসলে ক্ষমতার জন্যই এদের (হাসিনা-খালেদার) সবকিছু তাই সেটা আসলে তারা ছাড়বে না। মধ্যবিত্ত সংসারের একজন গৃহকর্ত্রী টিভি চ্যানেলে চৌকশ সাংবাদিকের সাথে জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব ও জ্বালানী মন্ত্রণালয়ের সচিবের টক শো দেখছিলেন। কামিজে সুঁই সুতা দিয়ে ফুল তুলতে তুলতে তিনি মন্তব্য করেন যে জাতীয় সক্ষমতা ও চুক্তি নিয়ে এতো জটিল তর্ক তার বোঝার দরকার নেই। তিনি বরং এদের প্রশ্ন করতে চান যে, দেশে যে প্রতিবছর এতোগুলো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এতো এতো ইঞ্জিনিয়ার বের হচ্ছে তারা কোথায় যাচ্ছে, কেন তাঁদের ছেলেদের চাকরীর জন্য দেশ ছাড়তে হচ্ছে? একই ব্যক্তি ভারত ও মায়ানমারের সাথে বাংলাদেশের সমুদ্রের সীমা ভাগ বাটোয়ারা হয়নি এবং কোনোকো ফিলিপ্স তেল কোম্পানীদের মধ্যে দুর্ঘটনা ঘটানোয় তৃতীয়স্থান অধিকার করে আছে এমন খবর শুনে মন্তব্য করেন যে বাঙালীর মাছ খাওয়া একেবারেই বন্ধ হওয়ার উপক্রম হল এই চুক্তির মাধ্যমে। তিনি আরও বলেন যে নদী নালায় কারখানার রঙ আর কেমিক্যাল ফেলায় বাংলাদেশে এর মধ্যেই নদীর মাছ খাওয়া বন্ধ হয়েছে।

সামাজিক আন্দোলন নিয়ে ১৯৮০ সাল থেকে গবেষণা কাজ করছেন নৃবিজ্ঞানী আরটুরো এসকোবার। তার কথা দিয়েই এই লেখা শেষ করবো। এসকোবার বলেছেন যে সাম্প্রতিক সময়ে আধুনিক পৃথিবীতে যে আন্দোলনগুলো সংগঠন হচ্ছে সেগুলোতে প্রাকৃতিক সম্পদের স্বল্পতা আর সেটা নিয়ে ভাগবাটোয়ারা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সময়ের জাতীয় কমিটির আন্দোলন ও তার প্রতি জনগণের সমর্থন পন্ডিত এসকোবারের ধারণাকেই শক্তিশালী করে। এখন সত্যিই অপেক্ষা করতে হবে এটা দেখার জন্য যে জনগণকে সাথে নিয়ে জাতীয় কমিটি সরকারের কাজকে ‘আন ডু’ করাতে পারে কি না, কোনোকো ফিলিপসের সাথে করা চুক্তি বাতিল করতে পারে কি না।

ফটো: জাতীয় কমিটির একজন কর্মী আহত অবস্থায় শাহবাগ হাজতের সামনে। ভেতরে আটকদের পেছনে দেখা যাচ্ছে। ছবিটি ৩ জুলাই হরতালের।

৩০ জুলাই, ২০১১।

ঢাকা।Image

4 responses to “জাতীয় কমিটি দেশকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে ?”

  1. সাম্প্রতিক বাংলাদেশে আন্দোলনে জন সম্পৃক্তার উদাহরণ হিসেবে তেল-গ্যাস-বিদ্যুত বন্দর রক্ষায় জাতিয় কমিটির একটি কার্যকরি এবং বিশেষ ভূমিকা রয়েছে বলেই আমি মনেকরি। কিন্তু সেদিন ইটিভির একটি টকশোতে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সমাজ বিজ্ঞানের একজন শিক্ষক বললেন, এখনকার কোন আন্দোলনেই নাকি জন সম্পৃক্ততা নেই। তা বোঝানোর জন্য উদাহরণ হিসেবে বললেন যে, যেমন বাম আন্দোলন, তেল গ্যাসের আন্দোলনে জনগণের কোন সম্পৃক্ততা ছিলনা। সুতরাং বিএনপিকে দোষ দিয়ে লাভ নাই।

  2. Liked these lines “আপনি যদি রাষ্ট্রকে একটি তেল কোম্পানী হিসেবে কল্পনা করেন তাহলে দেখবেন রাষ্ট্রটি ঠিকই কাজ করছে। অর্থাৎ, বিনিয়োগের নামে এরা বহুজাতিক পুঁজি’র ( যেমন: তেল কোম্পানীর) নিরাপত্তার জন্য কাঁটাতারের বেড়া ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বাহিনী তৈরী করে। ফলে অংক হিসেবে বড় এই সব পুঁজি দেশের জিডিপি’র হিসেবে উন্নয়ন দেখালেও তেল কোম্পানীর বেড়ার বাইরে সেই পুঁজির ছিটেফোঁটাও মানুষ পায়না।”

  3. Useful piece. Glad to see both Ferguson and Escobar incorporated.. thanks!

Leave a comment

Trending