সংবিধান ও সঙ বিধান

১৯৬০ এর দশক পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় আদিবাসীদের মানুষ বলে গণ্য করা হতনা।

১৯৬০ এর দশক পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় আদিবাসীদের মানুষ বলে গণ্য করা হতনা।

বাংলাদেশের সংবিধানে ২০১১ সালের এমেন্ডমেন্টে আদিবাসী টার্মে বাংলাদেশে বসবাসকারী সাঁওতাল, গারো, হাজং, চাকমা, মারমা, রাখাইন, ত্রিপুরা, ম্রুদের মত প্রায় গোটা পঞ্চাশেক জাতের মানুষদের জাতিগত পরিচয়ের স্বীকৃতি অস্বীকার করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালে ‘বিশ্ব আদিবাসী দিবস’-এ বাংলাদেশ সরকার বাহাদুর একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেন –বাংলাদেশে কোন আদিবাসী নেই। এর ফলে বাংলাদেশের নাগরিকদের মধ্যে অনেকেই, বিভিন্নরকম প্রতিক্রিয়া দেখান। এঁদের মধ্যে নৃবিজ্ঞানী প্রশান্ত ত্রিপুরা ফেসবুকে ডাক দেন এক কুইজ প্রতিযোগিতার। যার মধ্যে একটি প্রশ্ন ছিল – “সঙ বিধান কাহাকে বলে? ইহার সাথে সংবিধানের পার্থক্য, সাদৃশ্য বা সম্পর্ক কী? প্রাসঙ্গিক প্রেক্ষাপট ও দৃষ্টান্ত উল্লেখপূর্বক বিস্তারিত আলোচনা করুন।”
আজকের ব্লগ সেই প্রশ্নের উত্তর করছে।
সঙ বিধানের সাথে সংবিধানের কোন সাদৃশ্য বা নিকট সম্পর্ক নেই। এদের বিপরীতার্থক শব্দও বলা যায় না। এদেরকে পাশাপাশি বসানোর ভাবনা হয়তো সঙ এরা ভাবেনি, সংবিধান বিশারদরাও ভেবেছে বলে মনে হয় না। তবে শুনতে শব্দগুলো একরকমের কিন্তু তাদের পাশাপাশি বসানোটা উদ্ভট বলেই কৌতুকটা বেশ কার্যকর হয়েছে। যেমন আমার নিজেরই হাসি পেয়েছে প্রশ্নটা প্রথমে পড়ে। এই রসিকতার রসটি পেতে বা সংবিধান নিয়ে প্রশ্নকর্তার হতাশা ও ক্রোধ প্রকাশের ভাবটি বুঝতে সাম্প্রতিক বাংলাদেশের সামগ্রিক পরিস্থিতিটি প্রসঙ্গে না আনলে চলবে না। সে আলোচনায় এখানে যাচ্ছিনা । প্রথমে এখানে হিউমার বা কৌতুক, তামাশা নিয়ে বিভিন্ন তাত্ত্বিকদের মতবাদগুলো সংক্ষেপে আলোচনা করবো।
মানুষের কেন কৌতুকে হাসি পায় আর নারী জাতির কেন কিছু কৌতুকে হাসি পায় না এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে ২০০৬ সালে একটি লেখা তৈরী করি আমি। চন্দ্রবতী, নারী বিষয়ক ছোট কাগজ, ১ম সংখ্যায় ‘হাসির রাজনীতি’ শিরোনামে লেখাটি প্রকাশিত। সেখান থেকে কিছু অংশ উল্লেখ করছি :
“প্লেটো ও হবস এর কাজ বিশ্লেষণ করে লিন্ডা নারানযো-হোয়েবেল দেখান যে, ঐ সব তাত্ত্বিকদের মতে, অন্যের অক্ষমতা ও নিজের শ্রেষ্ঠত্বের বোধ হাসির জন্ম দেয়। অন্যভাবে বললে, আমরা যখন অন্যের সীমাবদ্ধতা নিয়ে হাসাহাসি করি তখন আসলে আমাদের নিজেদের নিয়ে শ্রেষ্ঠত্বের বোধ জন্ম নেয়। হব্স এর “নিজেকে মহিমান্বিত” করার এই তত্ত্ব অনেক কৌতুককে ব্যাখ্যা করতে পারে। হাস্যরস উদ্রেকের পেছনে নিজের সত্তাকে প্রতিষ্ঠা কিংবা অন্যের সাপেক্ষে নিজের সত্তার পরিচয় নিয়ে টানাটানি পড়লে তা প্রতিরোধ করা একটি কারণ হিসেবে কাজ করে। আর নিজের পরিচয় রক্ষার পেছনের সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে কর্তৃত্ব করার তাগিদ বা কর্তৃত্ব হাতছাড়া হবার হুমকি। অন্যভাবে বলতে গেলে, কৌতুকের সাথে জড়িয়ে আছে ক্ষমতা আর নিয়ন্ত্রণের প্রশ্ন। আর তাই, অনেক সময় “ইগো” কে রক্ষার বৃহত্তর স্বার্থে ক্ষমতা ও অন্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা ও রক্ষা করার উপায় হিসেবে কৌতুক ব্যবহৃত হয়েছে।
হোয়েবল আরও বলেন যে, ফ্রয়েড এবং তার ধারার তাত্ত্বিকরা মনে করেন কৌতুক হল আমাদের মনোজগতে অবদমনের (যৌন বা সামাজিক) অতৃপ্তিকে মুক্তি দেবার একটি আনন্দদায়ক ও সর্বজনস্বীকৃত মাধ্যম। এই তত্ত্বের মাধ্যমে নিজস্বতা রক্ষার যে আক্রমনাত্মক ব্যাখ্যা হবসদের থেকে পাওয়া যায় তার পাশাপাশি কৌতুকের, কৌতুককারীর এবং কৌতুকটি যারা উপভোগ করছে তাদের আত্মরক্ষামূলক বৈশিষ্ট্যটি খুজেঁ পাওয়া যায়।
কোন কোন তাত্ত্বিকদের ( যেমন: জোসেফ এডিসন, ডেভিড হার্টলে, জিবি মিলনার, হেনরি বার্গসন) মতে যখন ষ্পষ্টত অসামঞ্জস্যপূর্ণ দুই ধরনের যুক্তি অথবা চিন্তা কাঠামোয় হঠাত্ করে সংঘর্ষ বাধে তখন আমাদের হাসি পায়। নরম্যান হল্যান্ডের মতে এই অসামঞ্জস্য নানাভাবে হতে পারে। যেমন সমোদ্ভাব অসামঞ্জস্য। যখন কোন কিছু একই সাথে একটি বিষয়কে নাকচ করছে বা সমর্থন দিচ্ছে বা একই সাথে কোন বিষয়কে গোলমেলে করছে বা ঠিকভাবে সাজাচ্ছে। নৈতিক অসামঞ্জস্য বলতে আমাদের মূল্যবোধের বিপরীতাধর্মীতাকে বোঝায়। যেমন আমরা ভাল-মন্দ, উঁচু-নীচু, সুন্দর-গা ঘিনঘিনে ইত্যাদির পার্থক্য করি। সবশেষে কাঠামোগত অসামঞ্জস্যর মাধ্যমে আমাদের সামনে কাঠামোর অসঙ্গতি চোখে পড়ে। যেমন খুব ক্ষতিকর কিছুকে ক্ষতিকর না হিসেবে উপস্থাপন, যেটা খুব বেদনাদায়ক সেটাকে আরামদায়ক হিসেবে উপস্থাপন ইত্যাদি। কারও মতে এই সামঞ্জস্যহীনতার উপস্থাপন যখন মাত্রা ছাড়িয়ে চুড়ান্ত উদ্ভট ও অর্থহীনতার পর্যায়ে চলে যায় তখন আমরা হাসিতে ফেটে পড়ি। কেউ বলেন কৌতুকের রস ধরতে পারার জন্য অসামঞ্জস্যের মুখোমুখি সংঘর্ষের মধ্যে উপভোগকারীর নিরাপত্তবোধের উপাদান দিতে হবে। তবে মেরী রোথব্যাট উল্লেখ করেন যে রসবোধ আসলে একেক জনের কাছে একেক রকম। কারও কাছে যেটা হাসির কেউ কেউ তার মধ্যে হাস্যরসের খোঁজ না-ও পেতে পারেন।
তবে মোটের উপর হাসি আসলে একটি সামাজিক ও দলবদ্ধ ক্রিয়া। আপনি একা কাঁদতে পারবেন কিন্তু হাসতে হলে আপনার অবশ্যই এক জন (বা একদল) সঙ্গী দরকার। আর অন্যের সাথে সহজ ও প্রাণবন্ত যোগাযোগ এবং খোলামেলা হলেই একটি কৌতুক বলতে পারবেন বা একটি কৌতুক শুনে আপনি হাসতে পারবেন”। (পৃ:৮৩-৮৪)
সঙ মানে যারা রং তামাশা করে, দর্শক শ্রোতাদের মনে দমকা হাসির দমক নিয়ে আসে। উপরের আলোচনা থেকে অনুমান করা যায় যে সঙ দেরও রং তামাশা করার বিধান আছে, তাদের কাছে তামাশাটা জায়েজ।
এবারে আসি সংবিধান প্রসংঙ্গে। সংবিধান কোন তামাশার বিষয় নয়। বাংলাদেশের সংবিধানই এই প্রশ্নে নির্দেশ করা হয়েছে বলে মনে হয়। উত্তরে বলেতে হয় বাংলাদেশের প্রত্যেকটি মানুষের জীবন মরণ নিয়ণ্ত্রণকারী একটা মূল মন্ত্র বলা যায় এই সংবিধানকে। তবে এই মূল মন্ত্রটি সবসময় বিরাজমান ছিল না। এটা আকাশ থেকেও পড়েনি। বর্তমানে তিনপাশে তারকাঁটা দেয়া ৫৬ হাজার বর্গমাইলের এই ভূ-খন্ডের সীমানা নির্ধারনের সাথে এর আবির্ভাব সম্পর্কিত। ১৯৭১ সালের এই ভূখন্ডের নাম বাংলাদেশ হবার আগে এটার নাম ছিল পূর্ব-পাকিস্তান আর ১৯৪৭ এর আগে এটা ছিল ভারত বর্ষ’র একটা অংশ এবং এর ভেতরে বসবাসকারী মানুষদের আগে এরকম দৃশ্যমান সীমানা দিয়ে বিচ্ছিন্ন করে রাখা ছিল না। সাম্প্রতিক সময়ে আবির্ভূত এই সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রত্যেকটি মানুষ নাগরিক, তাদের জাতীয়তা-বাংলাদেশী।
সংবিধানকে এই ভূখন্ডের প্রায় ষোল কোটি মানষের জীবন মরণ নিয়ণ্ত্রণকারী মূল মন্ত্র বললাম কারণ এটাই আসলে ঠিক করছে ভূখন্ডটির উপর দাঁড়ানো মানুষটি মানুষ কি না, তাকে বাঁচতে দেয়া হবে কি না। আমার যুক্তিটি বোঝার জন্য মুহম্মদ জাফর ইকবালের নিসঙ্গ গ্রহচারী শিরোনামের বিজ্ঞান কল্পকাহিনীটির শরনাপন্ন হচ্ছি। সংক্ষেপে গল্পটি হল পৃথিবী থেকে একদল মানুষ নতুন কোন গ্রহে উপনিবেশ করা যায় কি না সেই উদ্দেশ্যে বের হল। তাদের স্পেসশীপ দুর্ঘটনায় ভেঙ্গে পড়ল একটি গ্রহে, সৌভাগ্যবশত যেটার পরিবেশ, অক্সিজেনের মাত্রা পৃথিবীর মানুষের জন্য উপযোগী ছিল। দূর্ভাগ্য যে সেই স্পেসশীপের কেউ বাঁচলোনা, একজন গর্ভবতী নারীর গর্ভের শিশুটি ছাড়া। তাকে মায়ের পেটের ভেতর থেকে বের করলো এক রোবট, কারণ রোবটটিকে এ ধরণের পরিস্থিতিতে দক্ষ ডাক্তার হিসেবে কাজ করার মত করেই প্রোগ্রাম করে বানানো হয়েছিল। এমনকি মানব শিশুটিকে মানুষের ইতিহাস, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান, ভাষা এমনকি দৈনন্দিন আচার আচরণ শেখানোর জন্যও তাকে প্রোগ্রাম করা ছিল। এভাবেই রোবটটির সান্নিধ্যেই মানবশিশুটি তরুন হল এবং হঠাৎ করে মানুষের আরেকটি দল নিয়ে আরেকটি স্পেসশীপ এসে নামলো সেই গ্রহে। গল্পে সমস্যাটা বাধেঁ আসেল একটি রোবটকে নিয়ে, যে ঐ মানুষ দলের দলনেতা ছিল। ঘটনাচক্রে সেই রোবটটি তার ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য নিসঙ্গ গ্রহচারীটিকে খুন করতে চায়। রোবট হয়েও সে এই মানুষটিকে খুন করার মত অসম্ভব কাজটি করতে উদ্দত হয় এই যুক্তির মাধ্যমে যে, পৃথিবীতে সংরক্ষিত মূল তথ্য ভান্ডারে যে সব মানুষদের তথ্য আছে তাদেরকে সে মানুষ হিসেবে বিবেচনা করতে বাধ্য কিন্তু যেহেতু এই নিসঙ্গ গ্রহচারীটি সম্বন্ধে পৃথিবীর তথ্য ভান্ডারে তথ্য নেই তাই স্বাভাবিকভাবেই সে একে মানুষ বলে বিবেচনা করছে না।
বলে নেয়া দরকার যে স্পেসশীপে চড়ে পৃথিবী থেকে দলে দলে মানুষ যে মহাশূন্য ঘুরে বেড়াচ্ছে বসবাস উপগোগী নতুন ভূখন্ডের বা গ্রহের খোজেঁ এই তত্ত্বটা বিজ্ঞান কল্পকাহিনীকারদের মধ্যে বেশ কয়েক দশক ধরে বেশ জনপ্রিয়। তাদের মতে কয়েক হাজার বছর পর এই ইন্ড্রাসট্রিয়াল পৃথিবীটা রাসায়নিক বর্জ্যে এতো বিষাক্ত হয়ে যাবে যে, যে কোন প্রানী বসবাসের জন্য সেটা অনুপোযোগী হয়ে পড়বে। এই সময়ে বিশ্বের ক্ষমতায় থাকবে বিজ্ঞানীরা যারা মানুষের অভাবে বা মানুষের জৈবিক সীমাবদ্ধতাকে পেরিয়ে যেতে সক্ষম মানুষের মত কিন্তু মানুষ নয় এরকম যন্ত্র বা রোবট দিয়ে অনেক কাজ সম্পন্ন করবেন। বিজ্ঞানীরা সেই সময়ে নকল বুদ্ধিমত্তা বা মানুষের মত বুদ্ধি করে অভিজ্ঞতা দিয়ে চিন্তা ভাবনা করে সিদ্ধান্তে আসতে সক্ষম এরকম উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন প্রোগ্রাম নিয়েও পরীক্ষা নীরিক্ষা করবেন। গোপনে গোপনে কেউ কেউ রোবটের মধ্যে মানুষের মত অনুভূতিগুলো (যেমন সুখ, দু:খ, হিংসা, দ্বেষ, প্রেম, কাম) প্রবেশ করাতে চান, কেউ চান মানুষের নকল আরেকটি মানুষ বা ক্লোন বানাতে। তবে বিজ্ঞানীদের উদ্দেশ্য ভাল। তারা মূলত অস্তিত্ব সংকটে পতিত মানব জাতির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতেই কাজ কর্ম করেন। অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার একটা উপায় মহাশূন্যে ঘুরে ঘুরে বাসযোগ্য নতুন গ্রহ খোঁজা। ভাল যে বিজ্ঞানীরা রোবট বানিয়েছে মানুষের সীমাবদ্ধ জৈবিক শক্তিকে অতিক্রান্ত করতে কিন্তু রোবটরা যেন মানুষের জীবনের জন্য হুমকি না হয় এজন্য তাদের বানানো হয়েছে এমন তিনটি সূত্র দিয়ে যা তাদেরকে স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষমতা দিলেও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মানুষের জীবন নাশ করা থেকে বিরত রাখে।
ঐ বিজ্ঞান কল্পকাহিনীতে রোবটটির তিনটি মূল সুত্র হল তার সংবিধান আর সে বিবেচনা করেছে মানুষ সম্বন্ধে পৃথিবীর মূল তথ্য ভান্ডার হল মানুষের সংবিধান তেমনি বাংলাদেশ সংবিধান হল বাংলাদেশ নামে ভূখন্ডের ভেতরে বসবাসকারী সকল মানুষের জন্য সংবিধান। এটা জীবন রক্ষাকারী কবচ কারণ জাতিরাষ্ট্র নামের ব্যপক ক্ষমতা সম্পন্ন সংগঠনটি তাদের মানুষের মত মানুষ হিসেবে খেয়ে পরে বেঁচে থাকা নিশ্চিত করে। এই সীমানার বাইরে থাকা মানুষকে বাংলাদেশ রাষ্ট্র মানুষ বলে হয়তো বিবেচনা করছে কিন্তু তাদের নিজেদের নাগরিক বলে বিবেচনা করছে না। বিশ্বের অন্যান্য জাতিরাষ্ট্রের সাথে সমঝোতায় এড়িয়ে যেতে পারছে তাদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় রসদ সরবরাহ করা থেকে বিরত থেকে। তাদের নাম দিতে পারছে শরনার্থী বা রিফিউজি।
মোদ্দা কথা হল সংবিধান আইন না, মানে আপনি রাস্তার ডানে চলবেন না বামে চলবেন সেটা নিয়ে অপরাধী নিরপরাধী বিচার এটা করে না। কিন্তু আপনি ডানের বদলে বাম দিক দিয়ে চলে অপরাধ করে থাকলেও আপনি যেন কোন প্রকার হেনস্তার শিকার না হন এবং শুধু মাত্র নির্দিষ্ট অপরাধের জন্য উপযুক্ত শাস্তিটিই পান সেটা নিশ্চিত করে এই সংবিধান। এখন কোটি কোটি মানুষের মধ্যে এতো সূক্ষ বিচার কাজ নিশ্চিত করা কঠিন যেখানে একজন মা পর্যন্ত তার পেটের দুই সন্তানকে একটি মাছ সমানভাবে ভাগ করতে হয়তো হিমশিম খেয়ে যাবেন। কিন্তু সংবিধান বলে সকল মানুষ সমান সম্মান, মর্যাদা ও বাটোয়ারা পাবার অংশীদার। এটা ঠিক যে সংবিধান প্রনেতারাও যাবতীয় জৈবিক-মানবিক-সামাজিক সীমাবদ্ধতা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সাধারণ মানুষ তাই তাদের প্রণীত বিধানে ফাঁক ফোকর থেকে যেতে পারে। তাই বলে সংবিধান তামাশার বিষয় কোনমতেই নয়। আর ওটাই হয়তো সঙ বিধানের সাথে, যদি সেরকম কিছুর অস্তিত্ব থেকে থাকে, সংবিধানের সম্পর্ক।



Categories: বাংলাদেশে নারীবাদ

Tags: , , ,

Leave a Reply

Please log in using one of these methods to post your comment:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s

%d bloggers like this: