অ্যালায়েন্স ফর বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স সেফটি: পোশাক শিল্পে কর্পোরেট গভর্নেন্সের নতুন সংযোজন

Image: Internet

Image: Internet

নাফিসা তানজীম

[গত কয়েক বছরে তাজরীন অগ্নিকান্ড ও রানা প্লাজা ধসের কারণে আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের পোশাক কারখানাসমূহের কাজের পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে বাংলাদেশের কারখানাগুলোতে পোশাক উৎপাদন করা কর্পোরেশানগুলো নিজেদের ব্র্যান্ড ইমেজ রক্ষার ব্যাপারে সচেতন হয়ে ওঠে। এর প্রেক্ষিতে ২০১৩ সালে “অ্যাকর্ড ফর বিল্ডিং সেফটি ইন বাংলাদেশ” ও “অ্যালায়েন্স ফর বাংলাদেশ ওয়ার্কার সেফটি” নামে দুটো কর্পোরেট কোড আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের ইতিহাসে কর্পোরেট কোড অফ কন্ডাক্ট প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন নতুন কিছু নয়। অতীতে বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে বেশ কয়েকবার এধরণের কর্পোরেট কোড গৃহীত ও বাস্তবায়িত হয়েছে এবং এই কোডগুলো দেশীয় ও আন্তর্জাতিক নানা মহলে আলোচিত ও সমালোচিত হয়েছে।

কর্পোরেট কোড অফ কন্ডাক্টের সমস্যা ও সম্ভাবনাগুলো কী কী? এই ধরণের কোড কাদের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেয়? শ্রমিকের জীবন ও কাজের পরিবেশের বস্তুগত পরিবর্তন আনতে কর্পোরেট কোড কতখানি ভূমিকা রাখতে পারে? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে বাংলাদেশের শ্রমিকের জীবন ও কাজের মান উন্নয়নের লক্ষ্যে নব্বইয়ের দশকে হার্কিন বিল পরবর্তী সময়ে গৃহীত একটি মেমোরান্ডাম অফ আন্ডারস্ট্যান্ডিং এবং একুশ শতকের দ্বিতীয় দশকে প্রণীত অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের উদাহরণ বিশ্লেষণ করে কর্পোরেটকেন্দ্রিক বিভিন্ন শ্রম অধিকার বিষয়ক উদ্যোগের সীমাবদ্ধতা এবং এর পেছনে কাজ করা বিভিন্ন ধরণের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক চালিকাশক্তির স্বরুপ উন্মোচন করতে হার্কিন বিল থেকে অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সঃ কর্পোরেটকেন্দ্রিক শ্র্ম অধিকার বিষয়ক উদ্যোগের সীমাবদ্ধতা এই বিষয়ে নাফিসা তানজীমের ধারাবাহিক লেখার তৃতীয় পর্ব]

অ্যাকর্ড ফর বিল্ডিং অ্যান্ড সেফটি ইন বাংলাদেশ স্বাক্ষরের দু’দিন পরে “অ্যালায়েন্স ফর বাংলাদেশ ওয়ার্কার সেফটি” নামে পাঁচ বছর মেয়াদী আরেকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ওয়ালমার্ট ও গ্যাপের নেতৃত্বে ও আরো কিছু মার্কিন কর্পোরেশানের উদ্যোগে অ্যালায়েন্স ঘোষণা করা হয়। অ্যালায়েন্স বাংলাদেশের কারখানাগুলোর ভবন সংস্কারের জন্য ২৫০ মিলিয়ন ডলারের আর্থিক সহায়তা প্রদান ও আরো ১০০ মিলিয়ন ডলার স্বল্প সুদে ঋণ হিসেবে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে (মরের ২০১৩)। অ্যালায়েন্স স্বাক্ষরকারী কর্পোরেশানসমূহের ব্যবহৃত কারখানাগুলোতে এক বছরের মধ্যে ইন্সপেকশান সম্পন্ন করে একটি সর্বজনীন নিরাপত্তাবিষয়ক মানদন্ড তৈরি করবে (ম্যাকলে ২০১৩)।

অ্যালায়েন্সটি চিলড্রেনস প্লেস, গ্যাপ, হাডসন’স বে, জেসি পেনি, কোলস, এল এল বিন, মেসি’স, নর্ডস্ট্রম, সিয়ার্স ও টার্গেটসহ উত্তর আমেরিকার বেশকিছু বিখ্যাত ব্র্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করে। অ্যালায়েন্সকে সমর্থন জানিয়েছে অ্যামেরিকান অ্যাপারাল ও ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশান, কানাডিয়ান অ্যাপারেল ফেডারেশান, ন্যাশনাল রিটেইল ফেডারেশান, রিটেইল কাউন্সিল অফ কানাডা, রিটেইল ইনডাস্ট্রি লিডারস অ্যাসোসিয়েশান এবং ইউনাইটেড স্টেটস অ্যাসোসিয়েশান অফ ইমপোর্টারস অফ টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারাল (মরের ২০১৩)।

মূলবক্তব্যঃ

– নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট অভিযোগ জানানোর একটি কার্যকরী, অভিন্ন ও বেনামী হটলাইন চালু করার উদ্দেশ্যে বেজলাইন সার্ভে করা।

– অগ্নি ও ভবন নিরাপত্তা, ট্রেনিং ও শ্রমিকদের ক্ষমতায়নবিষয়ক কাজ ও অগ্রগতিবিষয়ক অর্ধবার্ষিক রিপোর্ট প্রকাশ করা।

– ম্যানেজমেন্টের সাথে শ্রমিকের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করার জন্য প্রতিটি অংশগ্রহণকারী কারখানাতে শ্রমিকদের অংশগ্রহণে কমিটি তৈরি করা।

– কারখানার শ্রমিক, সুপারভাইজার ও ম্যানেজমেন্টকে ট্রেনিং দেয়ার জন্য একটি সর্বজনীন অগ্নি ও ভবন নিরাপত্তা বিষয়ক শিক্ষামূলক মানদন্ড ও কারিকুলাম তৈরি করা।

– নিরাপত্তা নিরীক্ষণের মানদন্ড তৈরির জন্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা। এই কমিটিটি যোগ্য ইন্সপেক্টরদের অনুমোদন দেবে, প্রতিকারের পরিকল্পনা করবে, কোন কারখানাগুলো অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে নিরীক্ষণ করা হবে তা ঠিক করবে, ইন্সপেকশানের রিপোর্ট অডিট ও অনুমোদন করবে এবং সংশোধণের উদ্যোগ ঠিকমত নেয়া হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করবে।

– অনুনোমোদিত সাবকন্ট্রাক্ট দেয়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করা (মরের ২০১৩)।

গুন্থারের মতে বাংলাদেশের শ্রমিকের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার মূল দায়িত্ব কার সেই প্রশ্নে অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স ভিন্ন ভিন্ন নীতিগত অবস্থান গ্রহণ করে। অ্যাকর্ড মূল দায়িত্ব অর্পণ করে কর্পোরেশানদের ওপর। অপরদিকে অ্যালায়েন্স মনে করে বাংলাদেশের সরকার ও কারখানার মালিকদেরকেই এ ব্যাপারে বড় ভূমিকা পালন করতে হবে (গুন্থার ২০১৩)।

সীমাবদ্ধতাঃ

অ্যাকর্ড ফর বিল্ডিং অ্যান্ড সেফটি ইন বাংলাদেশের সমর্থকেরা অ্যালায়েন্সের পরিকল্পনার ব্যাপক সমালোচনা করেছেন। তাঁদের মতে অ্যালায়েন্স অ্যাকর্ডের তুলনায় একটি অত্যন্ত দুর্বল চুক্তি। শ্রমিক বা শ্রমিক সংগঠনগুলোর সাথে কোনরকম আলোচনা না করে এই অ্যালেয়েন্স গঠন করা হয়েছে। অতীতে অ্যালায়েন্সের মত কোম্পানি নিয়ন্ত্রিত অডিট স্কিমগুলো বারবার ব্যর্থ হয়েছে। অ্যাকর্ডের সমর্থকেরা অভিযোগ করেছেন, অ্যাকর্ড কোম্পানিগুলোকে যে দায়িত্ববান ভূমিকা নিতে বাধ্য করবে, ওয়ালমার্ট ও গ্যাপের মত কর্পোরেশানগুলো সেই ভূমিকা পালন করতে অনিচ্ছুক। একারণে এই কর্পোরেশানগুলো নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী অ্যালায়েন্সের মত একটি একপাক্ষিক ও অস্বচ্ছ উদ্যোগ নিয়েছে। অ্যালেয়েন্স শ্রমিকদের ইউনিয়ন করবার বা অনিরাপদ কর্মপরিবেশ বর্জনের কোন অধিকার দেয় না। এটি ব্র্যান্ড ও পরিবেশকদের কারখানার পরিবেশের উন্নয়নের জন্য অর্থব্যয় করতেও আইননঙ্গতভাবে বাধ্য করে না (মরের ২০১৩)।

ওয়ার্কার রাইটস কনসর্শিয়ামের নির্বাহী পরিচালক স্কট নোভার মতে অ্যালায়েন্সের উদ্যোগে ওয়ালমার্ট তাদের ঝুঁকিপূর্ণ কারখানাগুলোর তালিকা প্রকাশ করে একটি প্রশংসনীয় কাজ করেছে কারণ বেশিরভাগ পরিবেশক ঝুঁকিপূর্ণ কারখানার নাম প্রকাশ করতে চাননা। কিন্তু ওয়ালমার্টের রিপোর্টে কারখানায় নির্দিষ্টকোনধরণের ঝুঁকি রয়েছে তা উল্লেখ করা নেই। ফলে ইন্সপেকশান এই রিপোর্ট অপর্যাপ্ত (গ্রিনহাউস ২০১৩)। নোভা মনে করেন যে, অ্যালায়েন্স মূলত কর্পোরেশান ও কারখানার মালিকদের স্বনিয়ন্ত্রণের পন্থা অবলম্বন করতে উৎসাহিত করছে এবং নিজেকে অ্যাকর্ডের একটি বিকল্প প্রস্তাব হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছে। কিন্তু অ্যালায়েন্সের এই উদ্যোগটি যুগ যুগ ধরে চলে আসা কর্পোরেশানের অন্যান্য অসফল প্রয়াস থেকে কোনভাবেই আলাদা নয় (শ্যায়ন ২০১৩)।

কর্পোরেশান কারখানার মালিক নাহলেও এবং কারখানাগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা সত্ত্বেও অ্যাকর্ড অনুযায়ী কারখানার পরিবেশের জন্য কর্পোরেশানকে আর্থিক ও আইনগতভাবে দায়ী করা সম্ভব। গ্যাপের নিবার্হী কর্মকর্তাগণ সুস্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে এই কারণে তারা অ্যাকর্ডের চেয়ে অ্যালায়েন্সকে শ্রেয় বলে মনে করেন (গুন্থার ২০১৩)। ওয়ালমার্টের মতে কারখানার কর্মপরিবেশের মূল দায়িত্ব নেয়া উচিত পোশাক রফতানিকারী দেশের সরকার ও সাপ্লায়ারদের। অ্যাকর্ডের মত একটি আইনগতভাবে বাধ্যকারী চুক্তি কারখানার অগ্নি ও কর্মপরিবেশের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য অপ্রয়োজনীয় (ব্যারি ২০১৩)। অ্যালায়েন্সকে যেভাবে অনেক কর্পোরেশান অ্যাকর্ডের একটি বিকল্প হিসেবে উপস্থাপন করছে তার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ওয়ার অন ওয়ান্ট সংগঠনের মুরে ওর্দি বলেন, “গ্যাপ ও ওয়ালমার্টের পরিকল্পনা একটি অজুহাত। এটি কারখানাগুলোকে কখনোই নিরাপদ করবে না। বরং এটি বাংলাদেশ সেফটি অ্যাকর্ডকে অবমাননা করবে। অ্যালায়েন্স শুধু আরেকটি নতুন কর্পোরেট শাসিত স্বেচ্ছাপ্রণদিত উদ্যোগ – যে ধরণের উদ্যোগ রানা প্লাজার মত দুর্যোগ মোকাবিলায় সুস্পষ্টভাবে ব্যর্থ হয়েছে। গ্যাপ, ওয়ালমার্ট ও অ্যালায়েন্সের পেছনের ব্র্যান্ডগুলোকে অবশ্যই এই ব্যয়বহুল পাবলিক রিলেশানের চমক পরিত্যাগ করে পোশাক শিল্পের অন্যান্য ব্র্যান্ডের মত অ্যাকর্ডের সাথে যুক্ত হতে হবে। কারণ অ্যাকর্ড কর্পোরেশানকে আইনগতভাবে শর্তাবদ্ধ করে বাংলাদেশের শ্রমিকের জীবন বাঁচাতে সক্ষম (ম্যাকলি ২০১৩)”।

যদি কোন কর্পোরেশান অ্যালায়েন্সে স্বাক্ষর করার পর সরে যেতে চায়, তবে তাকে শুধুমাত্র প্রশাসনসংক্রান্ত ব্যয়বহন করা ছাড়া অন্য কোন ধরণের জরিমানা দিতে হবে না। এএফএল-সিআইওর প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ট্রামকা উল্লেখ করেন, যেসব কোম্পানি স্বাক্ষর করার পর অ্যালায়েন্সের প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হবে, তাদের বিরুদ্ধে অ্যালায়েন্স থেকে বহিষ্কার করা ছাড়া আর কোন পদক্ষেপ নেয়া হবে না। এভাবে অ্যালায়েন্স প্রমাণ করে যে ওয়ালমার্ট, গ্যাপ ও তাদের মত অন্যান্য কোম্পানি পূরণ করতে হবে এমন কোন প্রতিশ্রুতি দিতে আগ্রহী নয়। তারা জনগণ ও মিডিয়ার কঠোর নিরীক্ষণের মুখে এমন প্রতিশ্রুতি দিতে চায় যা থেকে পরবর্তীতে নামেমাত্র মূল্য দিয়ে সুবিধামত সরে আসা সম্ভব। ট্রামকা আরো বলেন, অ্যালায়েন্সে যে “ওয়ার্কার পার্টিসিপেশান কমিটি”র প্রস্তাব করা হয়েছে তা শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়নে যোগদান করে সংগঠিত হতে নিরুৎসাহিত করবে (ম্যাকলি ২০১৩)। অ্যাকর্ডের মত অ্যালায়েন্সও শুধু প্রথম ও দ্বিতীয় টায়ারের কারখানার নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য আর্থিক বিনিয়োগ ও প্রশিক্ষণ প্রদান করবে। কিন্তু বাংলাদেশের যে বিপুল সংখ্যক কারখানা আন্তর্জাতিক বায়ারদের সাথে সরাসরি কাজ করে না সেসব কারখানা বরাবরের মত সব ধরণের উদ্যোগের বাইরে থেকে যাবে (বিয়ারনট)। ভারতের শ্রম অ্যাক্টিভিস্ট ভেঙ্কাটাসেন মন্তব্য করেছেন, “এদের (অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স) প্রতিদ্বন্দ্বিতার ধরণের কারণে বাস্তবায়ন সবচেয়ে কঠিন হয়ে দাঁড়া্বে (মরের ২০১৩)।”

বাংলাদেশের অনেক শ্রমিক সংগঠন ও বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের কার্যকারিতার ব্যাপারে সন্দিহান। ২০১৪ সালে বুয়েটের ইঞ্জিনিয়ার এবং অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স নিয়োযিত ইঞ্জিনিয়ারদের মাঝে কারখানার ভবনের কংক্রিটের পিএসআই কত হওয়া উচিত তা নিয়ে মতদ্বৈততা সৃষ্টি হয়। অ্যাকর্ড কারখানার জন্য যে পিএসআই সুপারিশ করে তা মেনে চলতে গেলে বাংলাদেশের অর্ধেকের বেশি কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে (ঢাকা ট্রিবিউন, ১৪ মে ২০১৪)। পরিশেষে আইএলওর মধ্যস্থতায় অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স বুয়েটের ইঞ্জিনিয়ারদের পিএসআই বিষয়ক সুপারিশ মেনে নেয় (ঢাকা ট্রিবিউন, ১৬ মে ২০১৪)। একই বছরের মে মাসে অ্যালায়েন্সের সাথে আয়োজিত একটি মিটিং-এ বাংলাদেশের অনেক শ্রমিক নেতা অ্যালায়েন্সের একের পর এক কারখানা বন্ধ করে দেয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। BNGWEL এর প্রেসিডেন্ট সিরাজুল ইসলাম রনি বলেন যে প্রায় ১০০০০ জন শ্রমিক ইন্সপেকশানের কারণ বেকার হয়ে পড়েছে। কিন্তু কারখানা বন্ধ হওয়া বা সংস্কারকাজের জন্য সাময়িকভাবে বন্ধ থাকা সত্ত্বেও অ্যাকর্ড বা অ্যালায়েন্সের কেউই শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ দেয়নি। বাংলাদেশ লেবার ফেডারেশানের জেনারেল সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন খান অ্যালেয়েন্সকে দু’মাসের পরিবর্তে ছয় মাস ধরে ক্ষতিপূরণ প্রদানের আহ্ববান জানান (ঢাকা ট্রিবিউন, ১৬ মে ২০১৪)। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজিএমইএর একজন ডিরেক্টর বলেন, “অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স ফ্যাক্টরি ইন্সপেকশানের জন্য হাজার হাজার ডলার খরচ করছে কিন্তু ফ্যাক্টরি সংস্কারের কোন খরচ বহন করছে না (ঢাকা ট্রিবিউন, ৬ মে ২০১৪)। ঢাকা ট্রিবিউনের রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১৪ সালের মে মাস পর্যন্ত অ্যালায়েন্স সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানার শ্রমিকদের দুই সপ্তাহ ধরে অর্ধেক বেতন প্রদান করলেও অ্যাকর্ড কোন ধরণের আর্থিক সহায়তা প্রদান করেনি (ঢাকা ট্রিবিউন, ৬ মে ২০১৪)। ২০১৪ সালের মে মাসে অ্যাক্টিভিস্ট নৃবিজ্ঞানী আয়োযিত একটি সেমিনারে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভানেত্রী মোশরেফা মিশু বলেন, “আমরা দেখবো অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স আমাদের কোথায় নিয়ে যায়। ব্র্যান্ডগুলো এতদিন ধরে এদেশের কাজের পরিস্থিতি নিয়ে কোনরকম মাথা ঘামায়নি। ব্র্যান্ড ইমেজ রক্ষার প্রশ্ন ওঠার পরেই এখন তারা কাজের পরিবেশ নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে। অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের সব সিদ্ধান্ত একচ্ছত্রভাবে নেয়া উচিত নয়। কারখানা বন্ধ করা হবে কিনা সেই সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রক্রিয়ায় আমাদের কারখানার মালিক, শ্রমিক ও সরকারকে অংশ নিতে দিতে হবে”।

(চলবে)

তথ্যসূত্র
Barrie, Leonie. “Bangladesh Safety Accord Still Raises Questions.”, last modified 15 May 2013, accessed 31 May 2014, http://www.just-style.com/comment/bangladesh-safety-accord-still-raises-many-questions_id117852.aspx.

Bearnot, Edward. “Bangladesh: A Labor Paradox.” World Policy Institute, accessed 11 March, 2014, http://www.worldpolicy.org/journal/fall2013/Bangladesh-Labor-Paradox.

Brooks, Ethel. 2007. “Children, Schools, and Labored Questions.” In Unraveling the Garment Industry: Transnational Organizing and Women’s Work, 1-25. Minnesota: University of Minnesota Press.

Clean Clothes Campaign and Maquila Solidarity Network. “The History Behind the Bangladesh Fire and Safety Accord.”, last modified 8 July 2013, accessed 2 June 2014, https://www.google.com/url?sa=t&rct=j&q=&esrc=s&source=web&cd=2&cad=rja&uact=8&ved=0CDEQFjAB&url=http%3A%2F%2Fwww.cleanclothes.org%2Fresources%2Fbackground%2Fhistory-bangladesh-safety-accord%2Fat_download%2Ffile&ei=Xa6LU7yMO9iQuATqjICIDg&usg=AFQjCNFB6Bsmin9h2w3vTQ-1rTdNPqOREA&sig2=6gYl6biySR8bQJQ_-Qaj8w.
Dhaka Tribune. 16 May 2014. “Accord Under Fire for Not Paying Jobless RMG Workers.” Dhaka Tribune.

Greenhouse, Steven. “Europeans Fault American Safety Effort in Bangladesh.” New York Times., last modified 18 November 2013, accessed 31 May 2014, http://www.nytimes.com/2013/11/19/business/international/europeans-fault-american-safety-effort-in-bangladesh.html?_r=0.

Gunther, Marc. “GAP Spearheads New Alliance for Bangladeshi Worker Safety.” The Guardian, last modified 11 July 2013, accessed 31 May 2014, http://www.theguardian.com/sustainable-business/gap-alliance-bangladeshi-worker-safety.

Klein, Naomi. 2000. No Logo. Canada: Vintage.

Marian, Petah. “What does the New Bangladesh Safety Accord Entail?”, last modified 14 May 2013, accessed 31 May 2014, http://www.just-style.com/comment/what-does-the-new-bangladesh-safety-accord-entail_id117835.aspx.

Maurer, Roy. “Public, Private Sectors Take Action to Improve Worker Safety in Bangladesh.”, last modified 29 August 2013, accessed 31 May 2014, http://www.shrm.org/hrdisciplines/safetysecurity/articles/pages/worker-safety-bangladesh.aspx.

McCauley, Lauren. “Critics Blast US Retailers’ Corporate-Dominated Factory Safety “Sham”.” Common Dreams, last modified 11 July 2013, accessed 31 May 2014, http://www.commondreams.org/headline/2013/07/11-0.

Ovi, Ibrahim Hossain. 2014a. “Accord & Alliance to Meet Buet Engineers Tomorrow to Solve Disputes.” Dhaka Tribune, 14 May 2014.
———. 2014b. “Accord and Buet Close to Consensus.” Dhaka Tribune, 16 May 2014.

———. 2014c. “Accord Flouts Deal to Skip Remediation Expenses.” Dhaka Tribune, 6 May 2014.

Shayon, Sheila. “US Retailers Detail Implementation of Controversial Bangladesh Safety Plan.” Brand Channel, last modified 21 August 2013, accessed 31 May 2014, http://www.brandchannel.com/home/post/2013/08/21/US-Bangladesh-Safety-Plan-Implementation-082113.aspx.

নাফিসা তানজীম, পিএইচডি গবেষক, রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়, যুক্তরাষ্ট্র



Categories: বাংলাদেশে নারীবাদ

Tags: , , ,

1 reply

  1. God owns everything He can solve everything

Leave a Reply

Please log in using one of these methods to post your comment:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Twitter picture

You are commenting using your Twitter account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s

%d bloggers like this: