আইনের চোখে ধুলো দিয়ে ধর্ষণের শিকার নারীকে নিরাপত্তার নামে নজরবন্দি করে রাখা যায়, হাসপাতালকে কারাগার বানানো যায়। কিন্তু ইতিহাসঘনিষ্ট ও সামাজিক বিচার-বিবেচনাবোধ দিয়ে আমরা জানি, রাঙামাটির বিলাইছড়িতে যৌন নির্যাতনের ঘটনায় সামরিকবাহিনীর কোনও না কোনও সংশ্লিষ্টতা আছে, না হলে হাসপাতালের বারান্দায় কেনইবা এই মহড়া চলছে। ইতিহাসের কথা বলছি, কারণ আমরা ১৯৯৬ সালে দেখেছি সেনাবাহিনীকে হেলিকপ্টার থেকে লিফটলেট বিলি করতে — “কল্পনা চাকমা অপহরণে তারা যুক্ত নয়।” ২০১৭ সালে যখন সামারিক হেফাজতে নির্যাতনের শিকার হয়ে রমেল চাকমার মৃত্যু হল, তখনও আমরা দেখেছি, কিভাবে সেনাবাহিনী রমেল চাকমার লাশ ছিনতাই করে নিয়ে যায়। ২০১৮-তে সেনা ধর্ষককে বাঁচানোর এই পায়তারা চিনতে আমাদের ইতিহাসই পথ দেখায়। মারমা বোনদের ধর্ষণ ও যৌননিপীড়নের ঘটনায় কোনও মামলা হয়নি এখনও (একটা সাধারণ ডায়েরি হয়েছে ), কিন্তু দুই সপ্তাহে তিনটি শুনানির তারিখ পড়েছে (আগামী শুনানী ৭ই ফেব্রুয়ারী, ২০১৮), অথচ কল্পনা চাকমা অপহরণ মামলায় ২১ বছরে ৩৭টি তদন্তে অপহরণকারীর খোঁজ পাওয়া যায়নি!
চাকমা সার্কেলের রাণী য়েন য়েন, রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় এবং নাম না-জানা আমাদের সহযোদ্ধারা হাসপাতালে সকল নজরদারী উপেক্ষা করে যৌন নিপীড়নের শিকার মারমা বোনদের হাত শক্ত করে ধরে আছেন। আমরা ঠোঁটকাটার পক্ষ থেকে ডেইলী স্টার উইকেন্ডে (ফেব্রুয়ারী ২, ২০১৮) প্রকাশিত রাণী য়েন য়েনের সাক্ষাৎকারটির বাংলা অনুবাদ এখানে পেশ করলাম।
মারমা দুইবোনকে ধর্ষণ
রাণী য়েন য়েনের সাথে আলাপ
(ডেইলী স্টার উইকেন্ডে (ফেব্রুয়ারী ২, ২০১৮) প্রকাশিত সাক্ষাৎকারের অনুবাদ)
২২শে জানুয়ারী, অভিযোগ অনুযায়ী* রাঙামাটির বিলাইছড়ির ফারুয়া ইউনিয়নের ওরাছড়ি গ্রামের একই মারমা পরিবারের দুই কিশোরীবোন নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যদের দ্বারা ধর্ষণ ও যৌননিপীড়ন শিকার হয়েছে। এই খবরটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়, কিন্ত খবরগুলো পরস্পরবিরোধী ও অসম্পূর্ণ। এই রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত সারভাইভাররা রাঙামাটির একটি হাসপাতালে ছিল, এবং তাদের সাথে সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের যোগাযোগের পথ প্রায় বন্ধ। স্টার উইকেন্ড য়েন য়েন, চাকমা সার্কেলের রাণীর সাথে কথা বলেন, রাণী সেই অল্প কয়েকজনের মধ্যে একজন যাদেরকে [প্রশাসন] যোগাযোগ করতে দিচ্ছে, এবং যাঁর কাছে দুইবোন আস্থার সাথে সব কথা জানিয়েছেন। এই সাক্ষাৎকারের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি নিচে দেয়া হল:
গত সপ্তাহে বিলাইছড়ির নিজ বাড়িতে দুইবোনের উপর যৌন সহিংসতা নিয়ে আমরা [ডেইলি স্টার]পরস্পরবিরোধী ও বিভ্রান্তিমূলক খবর পাচ্ছি। আপনার সহিংসতার শিকার নারীদের সাথে কথা বলার সুযোগ হয়েছিল। ওরা আপনাকে কি ঘটেছে বলে জানিয়েছে?
দুই বোন — বড়জনের বয়স ১৯ আর ছ্ােটজন ১৪ — বলল, তারা ২২শে জানুয়ারী আনুমানিক ভোর তিনটার দিকে ৪জন নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যকে দেখে। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, [নিরাপত্তাবাহিনীর] লোকেরা ওদের গ্রামের বাড়িতে আসে এবং ওদের বাবা মাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায় — কোনও একজন সন্ত্রাসীর ব্যাপারে কিছু জানতে চায় বা এরকম কিছু, কারণ পাশের গ্রামগুলোতে আগের দিন তল্লাশী চলছিল। ঐ চারজনের মধ্যে দু’জন লোক বাড়ির ভেতরে ঢুকে টর্চ লাইট জ্বালিয়ে ঘরে তল্লাশি চালায় এবং চলে যায়। তারা দ্বিতীয়বারের জন্য ঘরে ঢুকে, কিন্তু আবারও বেরিয়ে যায়। তৃতীয়বার, ওরা টর্চ লাইট বন্ধ করে এবং যে ঘরে দুবোন ওদের ৭ বছর বয়সী ভাইকে সাথে নিয়ে ছিল সেখানে ঢোকে। অপরাধীরা তখন ওদের মাথায় বন্দুক ধরে, কোনও আওয়াজ না করার নির্দেশ দেয় এবং চোখ ঢাকতে বলে। পালা করে দুজনেই বড় বোনকে ধর্ষণ করে, তারপরে অন্য বোনকে যৌন নিপীড়ন করে, কিন্তু যখন অপরাধীদের একজন ছোটবোনকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়, তখন [চুপ করে থাকার] হুমকি উপেক্ষা করে সে চিৎকার করে ওঠে।
দুইবোন আমাকে জানায় পরেরদিন — আমি সময়টা জানি না — গ্রামবাসী আর্মি ক্যাম্পে যায়, কিন্তু ওদেরকে বলা হয় “কিছুই হয়নি” এবং মুখ বন্ধ করে রাখতে। আমি জানি, আমার ওদের আরও প্রশ্ন করা উচিত ছিল, কিন্তু আমিতো কোনও তদন্তকারী নই। আমার ভূমিকাতো ওদের জিজ্ঞাসাবাদ করার নয়, এবং আমি ওদেরকে বারবার ট্রমাটাইজ করতে চাইনি।
আপনি প্রথম কখন ও কি পরিস্থিতিতে দুইবোনের সাথে কথা বললেন?
জানুয়ারীর ২৩ তারিখে ওদের এক আত্মীয় রাঙামাটি সদর হাসপাতালে ওদের নিয়ে আসে। আমি প্রথম খবরটি পাই একজন নারী অধিকার কর্মীর কাছ থেকে। আমরা সবাই পরের দিন হাসপাতালে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই।
যে ওয়ার্ডে মেয়েদের রাখা হয়েছে, আমরা সেখানে গেলাম, কিন্তু প্রথমে পুলিশ আমাদের ঢুকতে দিল না। আমি যখন বললাম আমি মেয়েদের সাথে কথা বলতে চাই, পুলিশ বলেছিল, এটা নিয়ন্ত্রিত এলাকা এবং তাদের কাছে নির্দেশ আছে কাউকে ঢুকতে দেয়া যাবে না। আমি তখন দাবি করি, কোনও নির্ভরযোগ্য কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এই মর্মে কোনও চিঠি থাকলে দেখাতে, এবং বলি যে চিঠি যদি না থাকে তাহলে এটা আমার অধিকার, আমি ভিক্টিমদের সাথে কথা বলব। আমার মনে হয়, পুলিশের কাছে আর কোনও অজুহাত ছিল না, ফলে তারা আমাদের ঢুকতে দিল।
তখন দুইবোনকে ডাক্তার দেখছিল; ওদের ডাক্তারি পরীক্ষা ২৩ তারিখেই শেষ হয়ে গিয়েছিল (প্রতিবেদন জানুয়ারী ৩০ তারিখের মধ্যে দেয়া হবে),** ওদের আবারও পরীক্ষা করছিল, কারণ বড় বোনের ২৪ তারিখ রক্তক্ষরণ হয়েছিল।
আমি যখন মেয়েদের সাথে কথা বললাম, ওরা তখনও ট্রমাটাইজড; ওরা আমাকে বলল ওরা ভয় পাচ্ছে, পুলিশ সারক্ষণ ওদের ঘিরে রেখেছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ওরা কি করতে চায়, ওরা বলল, “যদি আপনি আমাদের নিরাপত্তা দিতে পারেন, তাহলে আমরা আপনার সাথে যেতে চাই।” আমি ভাবলাম রাজা আসলে ওরা একটু মানসিক সাহস পাবে, আমি রাজাকে বললাম হাসপাতালে আসতে। আমি বাঞ্চিতা ম্যাডামকেও [মানবাধিকার কমিশনের বাঞ্চিতা চাকমা] বললাম আমাদের সাথে আসতে।
আমরা যখন ওয়ার্ডে ফিরে গেলাম, আবারও একই ঘটনার মুখোমুখি হত হল। তৎক্ষনাত তারা [পুলিশ] চিনতে পারল না যে সে ব্যারিস্টার রাজা দেবাশীষ রায়। পরিচয় করিয়ে দেয়ার পরও পুলিশ আমাদের বলল, রাজা মেয়েদের [দুই বোনের সাথে] দেখতে যেতে পারবে না। আমরা যখন প্রতিবাদ করলাম, অবশেষে, ওরা বলল, “যেতে পারেন, কিন্তু আপনাকে আমরা যে ভাষা বুঝি সে ভাষাতেই কথা বলতে হবে।”
সকালে যখন পুলিশ আমাকে বলেছিল আমি মেয়েদের সাথে কথা বলতে পারব না, আমি তাদের বলেছিলাম তারা চাইলে আমার কথা শুনতে পারে। তবে আমি মেয়েদের সাথে মারমাতেই কথা বলি, কারণ ওটাই ওদের মাতৃভাষা। এই কারণে তারা [পুলিশ] বিকেলে আমাদের কথা বলতে বাঁধা দিচ্ছিল।
রাজা বলেন আপনি কাউকে তার মাতৃভাষায় কথা বলতে বাধাঁ দিতে পারেন না, এবং আপনি কাউকে বাংলা বলতে বাধ্য করতে পারেন না, যদি তারা বাংলা না জানে। অবশেষে আমরা ওদের [দুই বোনের] সাথে আবার কথা বললাম, রাজা মেয়েদের বলল সে তার সাধ্যমত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করবে।
আপনি কি ভিক্টিমদের অভিভাবকদের সাথে কথা বলতে পেরেছেন? এমন খবর পাওয়া গেছে যে, বোনেরা বাবা-মার সাথে হাসপাতাল ছাড়তে রাজি না।
জানুয়ারীর ২৪ তারিখে রাঙামাটিতে একটি সংবাদ সম্মেলন ছিল, তাই আমরা জানি যে বাবা-মারা শহরে এসেছিল। আমরা আশা করেছিলাম, তাঁরা মেয়েদের দেখতে আসবে, কিন্তু আসেনি। জানুয়ারীর ২৫ তারিখে, আমার ঢাকায় আসতে হয়েছিল; সন্ধ্যা ৭টা বা ৮টার দিকে, বোনদের যারা দেখাশুনা করছে [হাসপাতালে] তাদের কাছ থেকে বার্তা পাই এই মর্মে যে, বাবা-মা অনেক পুলিশ ও সাদা পোশাকের গোয়েন্দাদের সাথে হাসপাতালে এসেছে, তাঁরা মেয়েদের [হাসপাতাল থেকে] নিয়ে যাবে। আমি যখন ওদের সাথে সর্বশেষ কথা বলেছি, বোনেরা আমাকে বলেছে, ওরা বাবা-মায়ের সাথে যেতে চায় না, তাই আমি এ্যাটেনডেন্টকে বললাম যে যদি ওরা [দুই বোন]এখনও তাই মনে করে, তাহলে সেটাই ওদের বলা উচিত। দুই বোন যেতে রাজি হয়নি।
২৬ তারিখে, আমি চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে [রাঙামাটি] ফিরছি, রাত প্রায় ১০টার দিকে ওদের একজন [দুই বোনের একজন] আমাকে অস্থির হয়ে ফোন করে, আমাকে তক্ষুনি হাসপাতালে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করে। ও বলে, “পুলিশ আমাদের এখান থেকে বের করে দিচ্ছে।” আমি ওদের বলি, আমি আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে। আমি এক ঘন্টার মধ্যে ওখানে [হাসপাতালে] পৌছাই, ওদের আইনজীবি সুস্মিতা চাকমা ওখানে ছিল, এবং বঞ্চিতা ম্যাডামও এসেছিল। আমরা তাদের [পুলিশসহ যারা এসেছিল] বললাম, মেয়েরা আমাদের সাথে আসতে চায়, আমার তত্ত্বাবধানে ওদের ছেড়ে দেয়া হোক। আমাদের বলা হল এ্যাডিশনাল এসপির জন্য অপেক্ষা করতে, উনি কিছুক্ষণ পরে আসল, এবং বলল এটা আদালতের বিষয় ও আদালতের নির্দেশ ছাড়া মেয়েদের ছাড়া যাবে না। আমরা চেষ্টা করলাম এটা বলার যে কোনও মামলা যেহেতু করা হয়নি তাই এটা আদালতের বিষয় হবে না। পুলিশ জোর করে নিরাপত্তা দিতে আসতে পারে না, মেয়েরা নিরাপত্তা চাইনি তাদের কাছে। কিন্তু এ্যাডিশনাল এসপি একই কথা বলতে থাকল, তর্ক করার কোনও মানে ছিল না।
পরের দিন আমরা আবার গেলাম, রাজা এবং সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদারকে নিয়ে, যাদেরকে সিভিল সার্জন জানিয়েছে যে ডাক্তারি পরীক্ষা শেষ এবং [রিপোর্ট] কনক্লুসিভ, তাই মেয়েদের ছেড়ে দেয়া যেতে পারে।
তখনই নাটক শুরু হল — আমি জানি না আপনি তার অংশবিশেষ ইউটিউবে দেখেছেন কিনা, কিন্তু এসপি আসল, তার সাথে জেল প্রশাসনের প্রতিনিধিরা। [হাসপাতাল] কক্ষে প্রায় ৩০-৩৫ জন তাদের লোক, বিপরীতে আমরা ৭ জন। আমরা ভিডিও ও ছবি তুলছিলাম, যেগুলো পরে মিডিয়ার হাতে পৌছায়। শেষমেষ, মেয়েদের ছাড়া হয়নি।
আমাদের যেসব পাঠকেরা কেসটি [ধর্ষণ ও যৌননিপীড়নের ঘটনাটি] অনুসরণ করছে না, তাদের জন্য আপনি ব্যাখ্যা করবেন কেন দুইবোন তাদের বাবা-মার সাথে যেতে চাইছে না?
দু’বোন আমাকে বলেছে, ওরা সারা জীবন নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যদের দেখেই বড় হয়েছে এবং ওরা শঙ্কিত, ভীত কারণ ওরা জানে তারা [নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা] কি করেছে এবং কি করতে সক্ষম। ওরা নিরাপত্তাবাহিনীকে বিশ্বাস করে না। দুই বোন নিশ্চিতভাবেই জানে যে তাদের বাবা-মাকে ভয় দেখানো হয়েছে, ২৫ তারিখে যখন তাঁরা [বাবা-মা] ওদের নিতে এসেছিল, তাঁরা এক প্রকার মেয়েদের মিথ্যা কথা বলতেই বলেছে [তাদের ঘটনাটির বিষয়ে]। ওরা গ্রামে ফিরে যেতে চায় না, ওখানে কোনও নিরাপত্তা নেই। এবং যদি বাবা-মার সাথে ফিরে যায়, ওরা ভয় পাচ্ছে ঝামেলা হবে, ওরা যে ইতিমধ্যেই মুখ খুলেছে। এছাড়া, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকে বাবা-মা তাদের সাথে কথা বলেনি, তাই দু’বোন জানে যে বাবা-মার ওপর নিষেধাজ্ঞা আছে। আমরা এটাও জানি যে বাবা-মা গ্রামে থাকছে না, এবং তাঁদের হাসপাতালে পাহারা দিয়ে আনা হয়েছিল ও ফেরত পাঠানো হয়েছে।
মানবাধিকার কর্মীদের মারমা বোনদের সাথে যোগাযোগ ও সহযোগীতার করার ক্ষেত্রে কি কোনও প্রতিবন্ধকতা আছে, বা সাংবাদিকদরা কি নজরদারি ছাড়া আত্মীয়দের সাথে কথা বলতে পারছে?
সাধারণ মানুষদের আসা-যাওয়ায় প্রচন্ড নিষেধাজ্ঞা আছে; কোনও সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার দেয়া হয়নি। আমরা যখন যাই, আমরা কোনও কিছু রেকর্ড করতে বা ছবি তুলতে পারি না। প্রশাসন ভয় পায় যে দু’বোন আমাদের কিছু বলবে, আর আমরা সেটা রেকর্ড করে পাবলিক করে দেব। অন্যদিকে, তাদের লোকেরা [পুলিশ প্রশাসনের] দু’বোনকে বারে বারে প্রশ্ন করছে। ওসি [পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা] নিজেই অভিযোগ করার ঢংয়ে মেয়েদের প্রশ্ন করেছে, ছবি তুলেছে এবং ভিডিও করেছে — তারা ধর্ষণের ভিক্টিম হওয়া সত্ত্বেও। এমনকি গতকালকে (জানুয়ারী ২৯), একজন লোক পুলিশ প্রশাসনের পরিচয়ে মেয়েদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছিল, কিন্তু মেয়েরা কথা বলতে অস্বীকৃতি জানায়। পকেটে স্মার্টফোনের ক্যামেরা আমাদের দিকে তাক করে [রাখে] সাদাপোশাকের পুলিশেরা — আমরা সারাক্ষণ নজরদারিতে, মেয়েরা সারাক্ষণ নজরদারিতে।
যেহেতু দু’বোনকে একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এবং প্রতিবারই তা রেকর্ড করা হয়েছে, আমরা মনে করি সেখানে [তাদের বয়ানে] কোনও অসংগতি থাকলে, সেটা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হবে। আমরা এই লোকদের বলার চেষ্টা করছি, আপনারা ওদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন না। ওরা হয়ত জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারতো, যদি কোনও মামলা রুজু করা হত, সেটা ছাড়া, কিসের ভিত্তিতে পুলিশ বা গোয়েন্দা বিভাগ ওদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে এবং ট্রমাটাইজ করবে বারে বারে?
শীঘ্রই কোনও মামলা করা কি হবে?
আমি আসলে মারমা বোনদের জিজ্ঞেস করেছি এ ব্যাপারে, বড় বোনটি যেহেতু ১৯ বছরের, সে যদি চায়, সে নিজেই [মামলা] করতে পারে। ও বলেছে, “এখনই না, আগে আপনি আমাকে এই জায়গা থেকে বের করেন।”
* উল্লেখ্য ডেইলী স্টার যে সংশয়সমেত লেখাটি প্রকাশ করেছে তার সাথে ঠোঁটকাটা একমত নয়। যেমন ধরুন, “অভিযোগ মতে”র (allegedly) ব্যাবহার, এটা দৈনিক পত্রিকার সীমাবদ্ধতা বা কৌশল। বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরকে পরোক্ষভাবে বিভ্রান্তিকর ও অসম্পূর্ণ তকমা দেয়া।
**যখন এই প্রতিবেদনটি ছাপা হয় তখনও মেডিকেল রিপোর্ট আদলতে জমা দেয়ার খবরটি নিশ্চিত করা যায়নি।
Categories: আন্দোলন বার্তা
Leave a Reply