বিশ্বব্যাপী মিটু আন্দোলনের জোয়ার তার স্বাভাবিক গতিতে বাংলাদেশেও ঢেউ তুলেছে। প্রতিষ্ঠিত পুরুষদের বিরুদ্ধে নারীরা যৌন নিপীড়ন, হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন। পৃথিবীর এক প্রান্তের নারীর কণ্ঠ, অন্য প্রান্তে নারীর কণ্ঠকে শক্তিশালী করেছে। সেই অথে নারী আন্দোলনের এমন গ্লোবালাইজড মুহূর্ত সাম্প্রতিক ইতিহাসে তেমন একটা নেই। বরাবরের মতনই অভিযোগকারী নারীর কণ্ঠকে রোধ করার লোকেরও অভাব হয়নি। সংগত কারণেই এই আন্দোলনের শ্রেণী চরিত্র নিয়ে কেউ কেউ কথা বলেছেন।
আমরা মিটু আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ঠোঁটকাটার পক্ষ থেকে আবারও যৌন নিপীড়ন বিরোধী আন্দোলন নিয়ে আলাপে বসেছিলাম। আমাদের আগ্রহ ছিল বাংলাদেশে যৌন হয়রানি বিরোধী আন্দোলনের দীর্ঘ ইতিহাসের অংশ হিসেবে মিটু মুহূর্তকে বোঝার চেষ্টা করা, আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছেদ, সাফল্য, ব্যর্থতার বিন্দুগুলোকে চিহ্নিত করা।
এবারের আলাপে আমরা একত্র হয়েছিলাম তিনজন — মির্জা তাসলিমা সুলতানা, নাসরিন সিরাজ ও সায়দিয়া গুলরুখ। আন্দোলন সূত্রে আমরা তিনজনই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানিবিরোধী আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলাম, বলাই বাহুল্য আমাদের আলাপে জাহাঙ্গীরনগরের অভিজ্ঞতা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি বিরোধী সেল ও তার জবাবদিহিতা এবং পুরুষাধিপত্যবাদী প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতা কাঠামো প্রাধাণ্য পেয়েছে। দীঘ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখন যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেল গঠন প্রায় বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, কিন্তু একটি সেল কি অভিযোগকারীকে নিরাপত্তা ও সুবিচারের নিশ্চয়তা দিতে পেরেছে? কখনও কখনও এমন ঘটেছে যে যৌন নিপীড়ক ও তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছে দুজনকেই শাস্তি দিয়েছে এই সেল। আবার প্রতিপক্ষ পুরুষকে ঘায়েল করার জন্য উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবেও যৌন নিপীড়নের অভিযোগ আনা হয়েছে। মিটু আন্দোলনের সর্বশেষ অভিযোগটি একটি ফেক ফেসবুক এ্যাকাউন্ট থেকে শেখ হাসিনার সরকারের সমালোচক একজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর বিরুদ্ধে আনা হয়েছে । এই বাস্তবতায় যৌনহয়রানির বিরুদ্ধে আন্দোলনের কৌশল কি হবে? এইসব প্রশ্ন নিয়েই প্রথম পর্বের আলাপে বসেছিলাম আমরা।
এই বিষয়ে আমাদের আগের সংলাপ ছিলো, কোটা সংস্কার আন্দোলন ও যৌনতার রাজনীতি। আলাপে বসেছিলাম আমরা থিয়েটার এক্টিভিস্ট ও সমাজ বিজ্ঞানী সামিনা লুৎফা নিত্রার সাথে।
Categories: আন্দোলন বার্তা, কথোপকথন
Leave a Reply