যৌন নিপীড়ন বিরোধী আন্দোলনের ২৩ বছর
যৌন নিপীড়নবিরোধী আন্দোলনের ২৩ বছর: ঠোঁটকাটার সাথে মির্জা তাসলিমার কথোপকথন
ঠৈাঁটকাটা: ১৯৯২ সালের ৬ই আগস্ট। সেদিন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি বিরোধী প্রথম ছাত্রী মিছিল হয় ও বাংলাদেশে পাবলিক পরিসরে যৌন হয়রানিবিরোধী সাংগঠনিক আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে। তার আগের দিন (৫ই আগস্ট, ১৯৯২) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে একজন ছাত্রী যৌন হয়রানির শিকার হন। এই ঘটনার জন্য দায়ী ছাত্রের (নাসির , শেষ বর্ষ, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ) শাস্তির দাবিতে ক্যাম্পাসের সকল ছাত্রী এক দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলে। প্রশাসন অভিযুক্ত ছাত্রকে দুই বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করতে বাধ্য হয়। আপনি এই আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ সংগঠক। তখন যৌন হয়রানির ঘটনা থেকে অধিক গুরুতর অপরাধ ছিল যৌন হয়রানি শব্দটিকে মুখে আনা। প্রায় ২৩ বছর পরে আমরা আপনার সাথে কথা বলতে এসেছি। আপনাদের সেদিনের শ্লোগানগুলো কি ছিল?সেই সময়কার আন্দোলনের বাস্তবতা ও লড়াইয়ের কৌশল সম্পর্কে বলুন।
মির্জা তাসলিমা: সত্য বলতে সেদিন আমরা বাসে যে ঘটনাটি ঘটেছে তাকে যে যৌন হয়রানি নামে চেনা যায় তা জানতামই না। মানে হল পৃথিবীতে ইতোমধ্যে এইরকম হয়রানি/নিপীড়নকে যে আলাদা নাম দিয়ে চেনা হয়, সেইটাই আমাদের জানাশোনার মধ্যে ছিল না। এই নামকরণের প্রসঙ্গটি এসেছে আরো পরে, ১৯৯৭/৯৮ তে। এমনকি সম্ভবতঃ ১৯৯৬ তে সীমান্ত দ্বারা হয়রানি বিরোধী যে আন্দোলন হয়েছিল সেখানেও এই প্রত্যয় ব্যবহার হয়নি বলেই মনে পড়ে। তবে ১৯৯২ তে আমাদের কাছে মনে হয়েছিল, নারীকে নিত্য হেনস্তা করার মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। জা,বি’র রাস্তা ঘাটে টিটকারি নিয়মিত ঘটনা ছিল, আর ভীড়ের বাসে গা ঘেষে দাঁড়ানো, বা সম্মতিহীন স্পর্শের অভিজ্ঞতা/ অপমানের অনুভূতির কথা আমাদের বন্ধুদের মধ্যে বলা বলি হচ্ছিল। ঐসময়ের আমাদের প্রায় সকলেরই ঢাকার রাস্তায়, গাওসিয়া মার্কেটের ভীড়ে এই অভিজ্ঞতাগুলো খুব বেশী হচ্ছিল। কিন্তু জা,বি র বাসেও যে এইরকম নিয়মিত হচ্ছে তা শুধু ব্যক্তিগত পর্যায়ে আলোচিত হচ্ছিল। তারপরও তখন জা, বি বাসকে আমরা ঢাকার অন্যান্য পরিসরের তুলনায় নিরাপদ ভেবে গর্ব করতাম। মনে রাখতে হবে ঐসময় ঢাকা ও ক্যাম্পাস উভয় জায়গাতেই সাধারণত সন্ধ্যার পর প্রয়োজন ছাড়া মেয়েদের বাইরে থাকার খুব বেশী চল/সামাজিক অনুমতি ছিল না। আমাদের সামনে ঘটা এই ঘটনা আমাদের ভীষণ অপমানিত, ক্ষিপ্ত ও বিচলিত করে তোলে। জা,বি বাস তো আর গাওসিয়া না! এছাড়া হয়রানি হওয়া মেয়েটি নিপীড়নকারীকে চড় মেরে দেয়, কিন্তু বাসে উপস্থিত শিক্ষকরা এগিয়ে আসে নাই, বরং সম্পূর্ণ নিরব ছিল, যেন কিছুই হয়নি। ফলে আমাদের কাছে তাৎক্ষণিকভাবে মনে হয় এর প্রতিবাদ হওয়া দরকার। আমরা স্নাতোকোত্তর পর্যায়ের কয়েক বান্ধবী একসাথে সেই বাসে ছিলাম, আমরা হলে এসে হলের আরো বন্ধুদের সাথে নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ মিছিল বের করে ভি,সির বাড়ি চলে যাই। আমাদের প্রায় কারো এইরকম প্রতিবাদ করার পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল না। মনে পড়ে হলের গেইট দিয়ে বের হয়ে আমরা পরস্পরকে জিজ্ঞাসা করতে থাকি স্লোগান কী হতে পারে! স্মৃতি অত স্পষ্ট নয়, তবে মনে পড়ে আমরা শোর তুলেছিলাম ’আমার বোনের গায়ে হাত কেন প্রশাসন জবাব চাই’– এই শ্লোগানে।
১৯৯৭ ও ১৯৯৮ তে ৮ই মার্চের র্যালিতে যৌন হয়রানির প্রতিকার চেয়ে স্লোগান ছিল। ১৯৯৮ তে আমরা যখন নানান শিক্ষকের সাথে ধর্ষণ ও যৌন হয়রানি নিয়ে কথা বলছিলাম তখন লক্ষ করি এই যৌন হয়রানি প্রত্যয়টি নিয়ে অনেকেরই অস্বস্তি। এছাড়া এই কর্মকাণ্ডগুলোকে অপরাধ হিসাবে দেখতেও অনেকেই প্রস্তুত ছিলেন না, এই দল ঘোরতোর প্রতিরোধ শুরু করে, নারীকেই দায়ী করে, তারা বরং নারীর আচার আচরণ নিয়ন্ত্রণে অধিক আগ্রহী ছিলেন। বিশেষ করে কথাবার্তাতে যৌন শব্দটির ব্যবহার ভব্যতার লঙ্ঘন ভাবত তারা। ভাষায় সরাসরি যৌন প্রসঙ্গ আনার ক্ষেত্রে ভদ্রলোকি ট্যাবু লক্ষ করি। নারীর লাঞ্ছনা, শ্লীলতাহানী, সম্ভ্রমহানী এই সব শব্দগুলো অধিক গ্রহণযোগ্য তাদের কাছে। অর্থাৎ নারীরই ভালত্ব খোয়া গেছে এইরকম প্রত্যয়গুলোতে তাদের স্বস্তি ছিল, অপরাধ ও অপরাধীকে চিহ্নিত করার বিপক্ষে ছিল অনেকে। নারীর বিরুদ্ধে করা অপরাধকে সঠিকভাবে চিনতে নামকরণ জরুরী বলে আদালত আমাদের দশ বছরের অধিক কালের আন্দোলনকে স্বীকৃতি দিয়ে সরকার ও তার প্রতিষ্ঠানগুলোকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে নির্দেশিত যৌন হয়রানি বিরোধী নীতিমালা মেনে চলতে স্পষ্ট দিক নির্দেশনা দিলেও এখনও সবক্ষেত্রে তার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হয়নি। রাষ্ট্র সংসদে আলোচনার মাধ্যমে কোন আইন প্রণয়ন করেনি। ফলে পত্র পত্রিকা ও বিভিন্ন প্রশাসনগুলোকে এখনও আমরা যৌন হয়রানী প্রত্যয়টি ব্যবহার করতে নিমরাজী দেখতে পাই।
ঠৈাঁটকাটা: এই ২৩ বছরে যৌন হয়রানি বিরোধী আন্দোলন সংগঠিত রূপ লাভ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি বিরোধী সেল গঠিত হয়েছে। বাংলাদেশের উচ্চ আদালতেও যৌন হয়রানিকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। যৌন হয়রানি এখন আর অনুল্লেখ্য বিষয় নয়। একই সঙ্গে যৌন হয়রানির, যৌন নিপীড়নের ঘটনার ধরণেও বদল ঘটেছে। সংঘবদ্ধভাবে যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটছে অহরহ। এ বছরের পহেলা বৈশাখের ঘটনায় যার চুড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ আমরা দেখেছি । আমাদের কাছে মনে হয়েছে, একটা ক্যাডার ভিত্তিক শাসন ব্যবস্থা এই ধরনের ঘটনার জন্য দায়ী।
এখনও স্পষ্ট মনে আছে, ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলনের (১৯৯৮) সেই রাতের কথা। আমরা সবাই উপাচার্য ভবনের সামনে অপেক্ষা করছি। সিন্ডিকেটের কাছে সত্যাসত্য যাচাই কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। সিন্ডিকেট সিদ্ধান্তের অপেক্ষা। রাত তখন প্রায় তিনটা বাজে। ফিসফাস শুনতে পাচ্ছি। উপাচার্য প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে ইশারার অপেক্ষায় আছেন। গ্রীন সিগন্যাল আসলেই শাস্তি হবে ধর্ষকদের। গ্রীন সিগন্যাল ছাড়া ধর্ষক হিসেবে চিহ্নিত ছাত্রলীগের ক্যাডারদের ছাত্রত্ব বাতিল করা যাবে না।
আমরা এমনটা বলতে চাই না যে, সকল যৌন হয়রানিকারী পুরুষই কোননা কোন দলের সদস্য। কিন্তু পাড়া–মহল্লা এলাকার দখল রক্ষার্থে একটি ক্যাডার ভিত্তিক নিয়ন্ত্রণ কাঠামো আছে। বর্তমান সরকারের আমলে এই ব্যবস্থাটা আরও সুসংহত হয়েছে। যৌন নিপীড়ন বিরোধী আন্দোলনের ক্ষেত্রে আমরা সাধারণত ”যৌন নিপীড়কের বিচার চাই।” প্রায় দুই যুগ পরে এই দাবীটির সীমাবদ্ধতাকে বোঝার জন্য এই ক্যাডার ভিত্তিক শাসন ব্যবস্থার প্রসঙ্গটি উল্লেখ করছি। একজন নিপীড়কের বিচার চাইলে দুর্বার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিচার আদায় করা সম্ভব। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘ আন্দোলনের ইতিহাস তাই বলে। একটু সেকেলে শোনাতে পারে, তাও বলছি। যে ক্যাডার ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কতিপয় পুরুষের ঔদ্ধত্য ও নিপীড়ক চরিত্রকে আশকারা দেয় ও পুঁজি করে নিজ ক্ষমতাকে সুসংহত করে সেই ব্যবস্থাটা আমাদের প্রতিবাদী মনোযোগের বাইরে রাখছি কেন?
একজন নৃবিজ্ঞানী হিসেবে দুই দশক পরে এই দাবিটিকে আপনি কিভাবে পাঠ করেন? একজন আন্দোলনকারী হিসেবে যখন মিছিলে এই শ্লোগানটাতে সহযোদ্ধাদের সাথে কণ্ঠ মেলান তখন আপনি কার বিচার চাইছেন? আমরা কার বিচার চাই? আমরা কিসের বিচার চাই?
পহেলা বৈশাখে সংঘবদ্ধ যৌন হয়রানির পর আন্দোলনকারীরা পাল্টা আঘাতের ডাক দিয়েছিলেন। কিন্তু কাকে, কোথায় পাল্টা আঘাত?
মির্জা তাসলিমা: বিষয়টা আমারও নজরে পড়েছে, আমাকে ভাবিয়েছেও অনেক। আমরা যখন যৌন হয়রানিকে চিনতে/চেনাতে চেয়েছিলাম, হয়রানি বিরোধী নীতিমালা চেয়েছিলাম, তখন সেই সময়ের প্রেক্ষিতে সেটাই ছিল মাইলফলক এবং ভীষণ দরকারী। এখনও এই প্রসঙ্গে তর্ক বিতর্কের প্রয়োজন ফুরায়নি বরং আরো অনেক বেশী মনোযোগ দাবী রাখে। যৌন হয়রানি নানান স্তরে ঘটছে, ব্যক্তি দ্বারা ও গোষ্ঠী দ্বারা বা গোষ্ঠীর মদতে। সব ক্ষেত্রেই এইগুলোকে চেনা ও তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ জারি রাখার কোন বিকল্প নেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পহেলা বৈশাখে ঘটা যৌন হয়রানির ঘটনা যে নতুন মাত্রায় নতুন ধরনের পরিকল্পনা মাফিক নিপীড়ন তা অনুধাবন করতে আমাদের অনেক বন্ধু, সহযোদ্ধাই ব্যর্থ হচ্ছেন বলে আমার ধারণা। ব্যক্তি নিপীড়নকারী আর গোষ্ঠীর পরিকল্পিত নিপীড়নের ফারাক ধরতে না পারলে তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ জারি রাখা ও প্রতিকার পাওয়াও মুশকিল বলে আমি মনে করি।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রদের ক্যাডার ভিত্তিক রাজনীতিকে পুঁজি করে যে প্রশাসনগুলোতে টিকে থাকে সে কথা সকলেরই জানা। আপনারা শুনে থাকবেন সাম্প্রতিক সময়ে জা, বি তে শিক্ষকদের একটি গ্রুপ নিজেরাই ক্যাডার বাহিনির মত ভূমিকা রাখছে। জুবায়েরের মৃত্যুর পর তৎকালিন প্রশাসন বিরোধী যে আন্দোলন হয়েছিল তার নেতৃত্বদানকারী শিক্ষক অধ্যাপক নাসিম আখতার হোসাইনকে তখন এই দলটি প্রকাশ্যে বাক্যে ও আচরণে হয়রানির প্রয়াস নিয়েছিল। কেউ কেউ এদেরকে একসাথে ’ডার্টি গ্রুপ’ বলে চিহ্নিত করেছেন। এরা বা যারা সংগঠিত রাস্তায় যৌন নিপীড়ন করে তারা হয়তো সমাজে নারীকে দেখবার বিদ্যমান মতাদর্শ ও ডিসকোর্সের উপর ভরসা করে নিপীড়নগুলো করছে, হয়তো বিদ্যমান যৌন হয়রানিরই বর্ধিত প্রকাশ এটি। কিন্তু যখন ন্যায় নীতিহীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, কিংবা রাষ্ট্র ক্ষমতায় টিকে থাকতে জনগণের ম্যান্ডেটহীন সরকার ভরসা করছে ও ফন্দি ফিকির করছে ভয়, লজ্জা, আর ঘৃণা উৎপাদনের উপর, এটাই যখন রাজনীতি তখন এইরকম দলগত পরিকল্পিত যৌন নিপীড়ন/হয়রানি আর দশটা যৌন নিপীড়ন ও হয়রানির চাইতে চরিত্রের দিক থেকে ভিন্ন। তখন ব্যক্তির সামাজিক মতাদর্শের উপর নির্ভর করে করা অপরাধের প্রতিকার/ প্রতিরোধের তরিকা দিয়ে এইরকম নিপীড়নকে মোকবেলা করা সম্ভব হবে না । আমি মনে করি গড়ে উঠা সাম্প্রতিক ’পাল্টা আঘাতে’র ধারণাও এই অবস্থাকে মোকাবেলা করতে অপ্রতুল। কারণ ’পাল্টা আঘাত’ এর প্রবক্তারা এখনও যৌন হয়রানীর পক্ষে সামাজিক মতাদর্শকে ঘটনার জন্য দায়ী করছে, বিশ্লেষণ করছে এবং তার বিরুদ্ধেই প্রতিরোধের জন্য পথে নামছে, তাদের যুক্তির মধ্যে রাষ্ট্রীয় প্রশাসনগুলোর নির্লিপ্ততা, খাপছাড়া সাফাই গাওয়ার সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টা ইত্যাদির প্রয়োজন মাফিক বিশ্লেষণ ততটা সামনে আনা হয় না।
বর্তমান বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য ন্যায় ভিত্তিক নয়, বরঞ্চ খুন জখম, বিচার বহির্ভূত হত্যা, সাইবার সন্ত্রাস, শিশুর নজিরবিহীন হত্যা, নিপীড়ন, শ্রমিক হত্যা, সর্বপরি মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করে ভয়ের রাজনীতিকে আদর্শ করে চলছে, এ রাষ্ট্র । এই ভয়ের রাজনীতির প্রধান নিয়ামক বিচারহীনতাকে জারি রাখা, অপরাধীদের সংগঠিত ও অপরাধকে ঘটতে দিতে উৎসাহ দেওয়া (কখনও কখনও এমনও মনে হয় রাষ্ট্র কি এখন এদের ব্যবস্থাপক হয়ে উঠছে?!), অসংখ্য অঘটন ঘটতে দিয়ে জনগণের আবেগকে পুঁজি করা, চৈতন্যকে ব্যতিব্যাস্ত করে, ক্লান্ত করে নিঃস করা, নিঃসাড় করা এখন মনে হয় রাষ্ট্রের প্রধান কৌশল। এতে করে সহজ হচ্ছে স্বার্থবাদী দলের স্বার্থ নির্বিবাদে রক্ষা করা! আমার আশঙ্কা এই নৈরাজ্য পরিকল্পনাকারী দল গণের আবেগকে পুঁজি করতে যত সংগঠিত ততটাই আমাদের জ্ঞান জগত এবং অ্যাকটিভিস্টগণ এই অবস্থা ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করতে তথা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে অপ্রস্তুত!
ঠৈাঁটকাটা: তারমানে এই বিচারহীনতার ব্যবস্থাপনা ও ব্যবস্থাপককে চিনতে হবে।
আপনার কথার সুত্র ধরেই পহেলা বৈশাখের ঘটনা যদি বোঝার চেষ্টা করি, তাহলে এটা স্পষ্ট যে, আমাদের আন্দোলনের পরবর্তী ধাপে পৌছাতে হবে। পহেলা বৈশাখের সিসিটিভি ফুটেজে শুধু যে নিপীড়ক পুরুষ ঘটনাস্থলে ছিলো তাকে খুঁজলেই হবে না, সিসিটিভি ক্যামেরাটি যিনি, যারা সেখানে বসিয়েছেন, ক্যামেরার চোখ তাঁদের দিকে স্থাপন করতে হবে। যে প্রক্টর, যে উপাচার্য উচ্চ আদালতের সমনের মুখোমুখি হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত টিভি টক্ শো-তে অবলীলায় মিথ্যা বলছেন তাদেরকে পরোক্ষ নিপীড়নকারী হিসেবে চিনে নিতে হবে।
আমরা আপনার সাথে একমত, শুধু নিপীড়ক পুরুষকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করালে হবে না, একই সাথে এই সংঘটিত যৌন নিপীড়নকে যারা “business as usual (কয়েক জন দুষ্টু ছেলের দুষ্টামি)” বলে চালাতে চায়, তাদের এবং সেই ব্যবস্থার উপর আঘাত হানতে হবে । তাদের বিচার কেন চাইব না?
এই আলাপটা এখানে abruptly শেষ করাটা প্রায় অপরাধের মতন মনে হচ্ছে। আশা করছি আজকে যেখানে শেষ করলাম আগামীতে সেখান থেকে আবার আলাপটা এগিয়ে নিতে পারব । আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।
মির্জা তাসলিমা: আপনাকেও ধন্যবাদ।
Categories: আন্দোলন বার্তা, কথোপকথন, যৌন নিপীড়ন ও প্রতিরোধ
Leave a Reply